বিশ্বজুড়ে আবারও করোনার দাপটে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। আর পাল্লা দিয়ে ব্যাপক ভাবে বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১০৬টি দেশে ছড়িয়েছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে করোনার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সারাবিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৮১ জন। আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে দুই হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮৭ জনে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৯০ জন। আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত বেড়েছে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার। এ পর্যন্ত আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৬৫ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৭ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে সবার আগে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড, ইউক্রেন ও ফ্রান্স। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ কোটি ৬৫ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৩ লাখ ৮৪ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৩৩৮ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৮১১ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ২২ লাখ ৫১ হাজার ২৭৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৩০ হাজার ৯৯০ জন মারা গেছেন।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৫৮ হাজার ৭৮ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬১ জন।
দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ২৭ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত ২৫ হাজার ৯০৭ জন। এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজার ৭১৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ২৪৯ জনের।
করোনায় ইউরোপের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত ৯০ হাজার ৬২৯ জন এবং মারা গেছেন ১৭২ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ১৫ লাখ ৪২ হাজার ১৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৮৩২ জন এবং মারা গেছেন ২২৯ জন। আর জার্মানিতে নতুন করে আক্রান্ত ৩৫ হাজার ৪৯ জন এবং মারা গেছেন ৫১৬ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৯ হাজার ৭৫৯ জন মারা গেছেন।
ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৬ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ৬২১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২২ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৯৯১ জনের।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ভয়াবহ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে। সংক্রমণের তালিকায় প্রতিদিনই একের পর এক দেশের নাম যুক্ত হচ্ছে। এপর্যন্ত বিশ্বের ১০৬ দেশে ওমিক্রনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। আফ্রিকা এবং ইউরোপের কিছু দেশে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন (সামাজিক সংক্রমণ) শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩ থেকে ৭৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে ওমিক্রনে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।