শুরুটা হয়েছিল ফিলিংস ব্যান্ডের হয়ে ‘হারানো বিকেলের গল্প দিয়ে’। এরপর গানের সাথেই রয়ে গেছেন দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে। এদেশের সঙ্গীত অঙ্গনে আইয়ুব বাচ্চু সত্যিকার অর্থেই উজ্জ্বলতর একটি নক্ষত্র । তিনি কেবল একজন ব্যক্তি নন, ব্যান্ড সঙ্গীতের জগতে তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। একজন গিটারিস্ট হিসেবে ভাবতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা আইয়ুব বাচ্চু কোটি শ্রোতার অন্তরে আছেন প্রিয় ‘এবি’ হয়েই। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত ছিলেন সোলস ব্যান্ডের সাথে। ১৯৯১ সালে গড়ে তোলেন লিটল রিভার ব্যান্ড বা সবার প্রিয় এলআরবি।
বর্তমানে এ গুণী ব্যান্ড তারকা নিজের চাইতেও বেশি মনযোগী এ প্রজন্মের তরুণ শিল্পীদের নিয়ে। শুরু থেকেই যুক্ত আছেন চ্যানেল আই এর ব্যান্ড ফেস্ট উদ্যোগের সাথেও। ১ ডিসেম্বর চ্যানেল আই চেতনা চত্বরে বসছে ‘ব্যান্ড ফেস্টের’ চতুর্থ আসর। বাংলা ব্যান্ডকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করার লক্ষ্যে বিজয় মাসের প্রথম দিনেই এ উৎসব। সে সব নিয়েই তিনি এক ঝাঁক নবীন শিল্পীকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন চ্যানেল আই এর প্রাঙ্গণে।
তারুণ্যের এ উৎসব নিয়ে দারুণ আশাবাদী আইয়ুব বাচ্চু। তিনি বলেন, তরুণরা এখন অনেক ভালো ‘মিউজিক’ করছে। তাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবেন। তিনি বলেন, ব্যান্ড ফেস্টটা আমার কাছে নিজের সন্তানের মতো। শুরু থেকেই আমি এর বেড়ে ওঠা দেখছি। তরুণরা এখানে আসছে, নিজেদের গান করছে। এটা তাদের জন্য বেশ ভালো একটা প্ল্যাটফর্ম।
শুরুর দিকে ব্যান্ড সঙ্গীতের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অতোটা ভালো না থাকলেও এখন বেশ খানিকটা বদলেছে বলে মনে করেন তিনি। ব্যান্ড শিল্পীদের ঠিকভাবে মূল্যায়নের প্রতি জোড় দেবার আহ্বান জানান। তিনি বলেন ব্যান্ড শিল্পীদের মিউজিসিয়ান বলুন অথবা ব্যান্ড নামে ডাকুন। তাদের হ্যান্ডস ডাকবেন না।
ব্যান্ডদল নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি ? এই প্রশ্নের জবাবে আইয়ুব বাচ্চু বলেন , অনেক তরুণরাই এখন ব্যান্ড গড়ছে। তাই ,আমার মনে হয় এই তরুণদের হাত ধরে অনেক দূর এগিয়ে যাবে এদেশের ব্যান্ড কেবল তাই নয়।
বাংলাদেশের ব্যান্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি শোনান আশার বাণী। বলেন, দারুণ উজ্জ্বল এদেশের ব্যান্ডের ভবিষ্যৎ। ‘আমি অনেক স্বপ্ন বাজ, এবং বাস্তববাদী। শুধু যারা নতুন আসছে তাদেরকে সাহস যোগাতে হবে।
বর্তমানে সময়ে ব্যান্ড দলগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার সংকট প্রসঙ্গে আইয়ুব বাচ্চু বলেন, এটা সামষ্টিক কোন সংকট না। এটা কৃত্রিম একটা সংকট। কারো নিজস্ব পছন্দের ব্যাপারগুলো , ব্যক্তিগত বিষয় গুলো হোটেলে বা ঘরে মীমাংসা করলেই ভালো। কোন ব্যক্তিগত আক্রোশ যেন ব্যান্ডের উপর না পড়ে।
সব শ্রেণির মানুষের কাছে ব্যান্ড ফেস্ট-এর মতো অনুষ্ঠান সাড়া পাচ্ছে কিনা প্রসঙ্গে আইয়ুব বাচ্চু বলেন, চ্যানেল আই যত জন মানুষ দেখে, তত জন মানুষ এই ব্যান্ড ফেস্ট দেখবে।বিশ্বের ছয়টি মহাদেশ থেকেই দেখার সুযোগ আছে এই উৎসব। ভবিষ্যতে ব্যান্ড ফেস্টকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে চান তিনি। তবে উৎসবের জন্য মাঠ বা জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে এ বছর তা সম্ভব হয় নি।
সবশেষে আশাবাদের গল্প শোনান এ গুণী শিল্পী। তারুণ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে,তাদের পাশে থাকতে হবে। তবেই স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাবে তারা।
ছবি- তানভীর আশিক