চট্টগ্রাম থেকে: একজন ড্যারেন স্যামি। আরেকজন মোহাম্মদ সামি। বিপিএলে সতীর্থ। প্রথম জন ব্যাট হাতে ১৪ বলে ৪৭ করে রাজশাহী কিংসকে ১৮৫ রানের স্কোর গড়ে দেন। আরেকজন বল হাতে চার উইকেট নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১৫৫ রানে থামিয়ে দেন।
পঞ্চম আসরে ৩০ রানের এই হার কুমিল্লার দ্বিতীয়। ১০ পয়েন্ট নিয়ে এখনো দ্বিতীয় স্থানে আছে দলটি। তৃতীয় স্থানে থাকা ঢাকার সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট। এই জয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে রাজশাহী।
আগে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহীর অবস্থা শেষ পাঁচ ওভারের আগ পর্যন্ত এতটুকু ভালো ছিল না। প্রথম পাঁচ ওভারে রান ছিল বিনা উইকেটে ৪২। সেখান থেকে পথ হারিয়ে ১২ ওভারে ৪ উইকেটে ৮৬। মাঝের এই চিত্র শেষ ওভারে বদলে দেন স্যামি। প্রথম তিন ওভারে ১৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নেয়া সাইফের এই ওভার থেকে ৩২ রান তুলে নেন! বিপিএলের ইতিহাসে এক ওভারে এটিই সবচেয়ে বেশি রান দেয়ার নজির। শেষ পাঁচ ওভার থেকে দলটি রান তোলে ৭২।
দলকে ভালো শুরু এনে দেন মুমিনুল হক আর ডোয়াইন স্মিথ। দিনকে দিন বড় শট খেলায় মন দিতে থাকা মুমিনুলকে অনুশীলনের মতো ম্যাচেও বার কয়েক ‘ডাউন দ্য ট্রাকে’ উঠতে দেখা গেছে। রানআউট হওয়ার আগে পাঁচটি চারের সাহায্যে ১৬ বলে ২৩ করেন। আরেক ওপেনার স্মিথও চালিয়ে খেলছিলেন। ১৯ রানের ভেতর চারটি চার হাঁকান। মুমিনুলের আগে দলীয় ৪৩ রানের মাথায় মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন বোল্ড করেন তাকে।
৪৭ রানের ভেতর দুই উইকেট চলে যাওয়ার পর রানের গতি ঠিক রাখতে পারেননি রাজশাহীর মিডলঅর্ডার। ঢাকা পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৫৫ করা মুশফিকুর রহিম এদিন সাত বলে আট রান করে সাইফের বলে ইমরুলের হাতে ধরা পড়েন। বিপিএলে এই মৌসুমে প্রথম খেলতে নেমেই অর্ধশতক হাঁকানো জাকির হাসান নিজের চতুর্থ ম্যাচে ১৫ বলে ২০ করে বিদায় নেন।
লুক রাইট ৪২ করলেও বল খেলেন ৩৬টি। ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে সাইফকে স্কুপ করতে যেয়ে শর্টফাইন লেগে হাসান আলীর হাতে ধরা পড়েন।
কুমিল্লার আল-আমিন ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে এক উইকেট নেন। হাসান আলী ২ উইকেট নিতে ৩৮ রান খরচ করেন। নিজের প্রথম তিন ওভারে তিন উইকেট তুলে নেয়া সাইফ চার ওভার শেষে রান দেন ৫০। রশিদ খান ২৬ রান দিয়ে উইকেটহীন।
জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারে ফখর জামান (২) ফিরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে ফিরে যান ইমরুল কায়েস (০)। কুমিল্লা শুরুর এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে শোয়েব মালিকের ব্যাটে। ২৬ বলে ৪৫ করে দিয়ে যান। পাঁচটি চার এবং দুটি ছয়ের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। মালিক ফিরে গেলেও আরেক পাশ ধরে থাকেন চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবাল। জস বাটলারকে নিয়ে দলকে লড়াইয়ে রাখার চেষ্টা করেন। পাওয়ার প্লে শেষ হয়ে গেলেও বড় বড় শটে গ্যালারি মাতিয়ে রাখেন। তামিম যখন বিপজ্জনক হয়ে ওঠার পথে ঠিক তখন মোহাম্মদ সামি-ঝলক। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুমিল্লার অধিনায়ককে ফেরান তিনি। লফটেড শটে সুইপার কাভারে স্মিথের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ৪৫ বলে ৬৩ করেন দেশসেরা ওপেনার। একই ওভারে অলক কাপালিকে ফিরিয়ে কুমিল্লাকে পুরোপুরি ব্যাকফুটে ঠেলে দেন ওই সামি।
সামি চার উইকেট নিতে মাত্র ৯ রান খরচ করেন। স্মিথ ২৭ রান খরচায় দুজনকে ফেরান। দুই উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজও। তিনি রান দিয়েছেন ৩২। একটি করে উইকেট মেহেদী হাসান মিরাজ, ফ্রাঙ্কলিনের।