২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের বিশাল ঘাটতি মেটাতে সরকারের ব্যাংক নির্ভরতা বাড়ছে। এ খাত থেকে সরকার ঋণ নেবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থানকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।
জাতীয় সংসদে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এটি ক্ষমতাসীন সরকারের চলতি মেয়াদের দ্বিতীয় এবং দেশের ৪৯তম বাজেট।
এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে সরকার ঋণ হিসেবে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নেবে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৬ থেকে ৮ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছে। আর সঞ্চয়পত্রে সুদ গুনতে হয় ১১ শতাংশের বেশি। এ কারণে অভ্যন্তরীণ উৎসে এখন ব্যাংক খাতের ওপর সরকারের ঋণ নির্ভরতা ব্যাপক বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে চলতি অর্থবছরের পুরো সময়ে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৭২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা করা হয়েছে। গত ৩১ মে পর্যন্ত সরকার নিট ৬৪ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা নিয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় যা ৩৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।
এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, রাজস্ব ঘাটতির চাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার বাধ্য হয়েই ব্যাংক খাতের উপর নির্ভর করছে।
তিনি বলেন, এমনিতেই রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ভালো ছিল না। এরমধ্যে করোনাভাইরাস রাজস্ব আদায়ে আরো ব্যঘাত ঘটিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই সরকার ব্যাংকনির্ভর হয়ে পড়েছে।
ব্যাংকাররাও সরকারকে ঋণ দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)-এর সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারকে ঋণ দেওয়াই বেশি নিরাপদ। আর সরকারেরও এখন ঋণ দরকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের শুধু মে মাসেই সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৬ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা।