প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব আখ্যা দিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন: এ বাজেট বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগ সৃষ্টি হবে। এতে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়বে।
শুক্রবার বাজেট পরবর্তী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন: নতুন এ বাজেট ব্যবসাবান্ধব। আমি মনে করি, ব্যবসায়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। আর উৎপাদনে যেতে হলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। কারণ লোকবল ছাড়া উৎপাদন সম্ভব নয়। এ কারণে ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে সুযোগ বাড়ানো হয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যেও গত বছর বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৮.২ শতাংশ ধরেছিল সরকার। তা অর্জিত না হওয়ায় এবার সেই লক্ষ্যে রাশ টেনেছেন অর্থমন্ত্রী।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক জানিয়েছিল আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু অর্থমন্ত্রী এবারের বাজেটে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছেন ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির এ লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব কিনা- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন: বৈশ্বিক মহামারির মধ্যেও আমাদের প্রবৃদ্ধি ভালো হয়েছে। লক্ষ্য ঠিক মতো বাস্তবায়ন করতে পারলে সামনের বছরও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। হয়তো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশিও হতে পারে।
বাজেটে কর ছাড়ের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন: করহার আস্তে আস্তে কমালেই সংগ্রহ বাড়বে। আর বাজেট ব্যবসাবান্ধবই। প্রতি সময় মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়। চাহিদা পূরণে ব্যবসায়ীদেরও পরিবর্তন আসে। সারা বিশ্ব কী করছে, সেটিও দেখতে হবে। উন্নত বিশ্ব যদি পিছিয়ে পড়ে, তাহলে আমরা কিন্তু এগোতে পারব না। কারণ, উন্নত বিশ্বের মাধ্যমেও আমরা সমৃদ্ধ।
কালোটাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে তিনি বলেন: এটা কালোটাকা নয়। অপ্রদর্শিত আয়। এটা নিয়ে মিশ্র অভিমত আছে। কেউ বলেন, এটা ভালো। আবার কেউ বলেন, ভালো না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তারা।
গতকাল ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বিশাল বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। যা দেশের মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৬৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা বেশি।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘাটতির নতুন মাইলফলক স্পর্শ করা এই বাজেটে অনুদানসহ মোট ঘাটতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ।