ব্যক্তির মৃত্যুর পরও মামলা পরিচালনা নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের আইনে কোন ব্যক্তির মৃত্যুর পর মামলাসহ সবকিছুরই মৃত্যু ঘটে। অর্থাৎ মামলার কার্যক্রম পরিচালনার কোন সুযোগ থাকে না।
এরকম অবস্থায় হাইকোর্টের বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি ডক্টর কে এম হাফিজুল আলমের বেঞ্চে ওই আবেদন নিয়ে যান আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।
তিনি বলেন, নীফামারির জলঢাকার খাদ্য পরিদর্শক হামিদুল হক তকদারের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে মাত্র ১০৫০ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ওই বছরের ৯ জুলাই বিচারিক আদালত আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ ও ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কারাগারের যাওয়ার ৯ দিনের মাথায় ২০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন আসামি হামিদুল হক।
বাংলাদেশের ফৌজদারি আইন অনুযায়ী মামলার কার্যক্রম এখানেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। কয়েক বছর পরে আসামির স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে ওই মামলা বাতিল চেয়ে চলতি বছরের ৬ আগস্ট আবেদন করেন। আইনজীবী বলেন এর উদ্দেশ্য হলে মামলা বাতিল করে আসামির চাকরির সুযোগ সুবিধা যেন পরিবারের সদস্যরা পায় তা নিশ্চিত করা।
তবে আমাদের দেশে পরিবারের সদস্যদের বা অন্য কারও দ্বারা মৃত ব্যক্তির মামলা পরিচালনার আইন বা দৃষ্টান্ত না থাকায় বাইরের দুটি দৃষ্টান্ত আদালতে তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে ভারতের আইন কমিশন মত দিয়েছিল এই রকম পরিস্থিতে পরিবারের সদস্যরা সুযোগ সুবিধা পাবেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের আদালত একটি পরিবারের আপিল গ্রহণ করে। ব্রিটিশ ১৯৬৮ সালের ফৌজদারি আইনের ৪৪/এ তে বলা হয়েছে স্ত্রী সহ অন্যান্যরা সুবিধা পাবে।
হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনে রুল জারি করেন, জানতে চাওয়া হয় হামিদুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা কেন বাতিল করা হবে না। একই সাথে ব্যক্তির মৃত্যুর পরে মামলা পরিচালনার বিষয়ে এমিকাস কিউরিয়া নিয়োগ দেন।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক বলেন, কোন কোন আইনজীবীকে এমিকাস কিউরিটাস নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা আদেশে উল্লেখ করে দিবেন আদালত। আগামী বছর জানুয়ারিতে রুলের শুনানি হবে। এই মামলায় যদি আসামির পক্ষে যায় তাহলে এই ধরনের মামলায় বহু পরিবার উপকৃত হবার পথ উন্মুক্ত হবে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)