ঈদ আনন্দের রেশের মধ্যেই বাংলাদেশের নতুন এক অর্জনের কথা জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। তার তথ্যমতে, গত এক বছরে ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন কর্মীকে বিদেশে পাঠিয়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ।
শুধু তাই-ই নয়, জাতীয় সংসদে তিনি আরো একটি সুখবর দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠাতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিশ্বের ৫২টি শ্রমবাজার নিয়ে কাজ চলছে। নিঃসন্দেহে এটা সবদিক থেকেই এটা ভালো খবর।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সূত্রের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জন শ্রমিক বিদেশে গেছেন। তাদের বেশির ভাগই গেছেন মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। তার মানে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের বাজার নির্ভরতা থেকে এখনো বের হতে পারিনি।
অথচ এ খাত সংশ্লিষ্টরা অনেক বছর থেকেই বলে আসছেন, বিকল্প বাজারের খোঁজ নিতে হবে। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকার শ্রমবাজার ধরতে হবে। শুধু তাই নয়, এজন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা ও দক্ষ কূটনৈতিক পদক্ষেপের কথাও তারা বারবার বলেছেন। কিন্তু সেখানে ইতিবাকচ পদক্ষেপ কিছু দেখা যায়নি।
এরই মধ্যে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ থেকে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদেরকে অমানবিক নির্যাতনের মুখে ফিরে আসতে দেখেছি। এসব ঘটনা নিশ্চিতভাবেই দেশের নারী জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ বিষয়ে এখনই উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি ঘটার আশঙ্কা থেকেই যাবে।
আমরা জানি, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স। চলতি বছরের মে মাসে রেকর্ড সৃষ্টি করে সর্বোচ্চ পরিমাণ ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। আগের মাস এপ্রিলেও রেমিট্যান্স আসে ১৩২ কোটি ৭১ লাখ ডলার।
তাই আমরা মনে করি, বৈদেশিক কর্মসংস্থান তৈরিতেই সরকারের সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে সরকারের নানা উদ্যোগও আছে। তবে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক। তবে নতুন ৫২টি শ্রমবাজারে জনশক্তি পাঠাতে সরকারের যে পরিকল্পনা-সেখানে নিশ্চয়ই নতুনত্ব থাকবে।