চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বেসিক ব্যাংকের লোকসানি শাখা বন্ধ করে দেয়া হবে: অর্থমন্ত্রী

বেসিক ব্যাংককে আল্টিমেটাম দিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এই ব্যাংকের যেসব শাখা টানা ৩ বছর লোকসান করেছে বা কোনো লাভ দিতে পারেনি সেসব শাখাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা শেষে এসব কথা জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত অনেক দুর্নীতি হয়েছে। সে সময়ে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে যেসব ব্যাংক কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং বেনামে ঋণ দেওয়া হয়েছে সেসব শাখাগুলো এখন আর লাভ করতে পারছে না। ওইসব শাখাগুলোর মধ্যে যেগুলো গত ২ বছর এবং বর্তমান বছরে লাভ দেখাতে ব্যর্থ হবে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। যারা ২ বছর ধরে লোকসানে আছেন তারা এই বছর সতর্ক হয়ে যান।

বর্তমানে ব্যাংকটির মোট লোকসানের পরিমাণ ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালেও ব্যাংকটি লোকসান করেছে ৩৫৬ কোটি টাকা। ব্যাংকটির ৩৬টি শাখা লোকসানে আছে এখন।

যারা বেনামে ঋণ নিয়েছে টাকা ফেরত না দেয়ার জন্য, তাদের ছাড় দেয়া হবে না- এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, এদের (ঋণ খেলাপি) পেছনে আমরা এজেন্সির লোক নিয়োগ দেব। দেশ-বিদেশে যেখানেই থাকুক তাদের বের করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা ঋণ আদায় সহজ করে দেব কিন্তু ঋণ মাফ করতে পারব না।

বেসিক ব্যাংকে স্পেশাল অডিট করা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কম হলেও শাস্তি দেয়া হবে। সময় যত খারাপ হবে, দুর্নীতিকারীদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তও তত কঠিন হবে। একটি ব্যাংক দীর্ঘদিন খারাপ অবস্থায় থাকতে পারে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় আপনাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীকে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ক্রেস্ট দিতে চাইলে; তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি এখন ক্রেস্ট নেব না। এক বছরে যদি বেসিক ব্যাংক ভালো করতে পারে তাহলে ক্রেস্ট নেব। আপনারা ভালো করেন আগামীতে আপনাদের সঙ্গে আমরা পিকনিক করব।

অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ব্যাংক ইচ্ছা করলে খেলাপি ঋণ আদায় করতে পারে। ঋণ আদায়ে শক্ত হতে হবে। বর্তমানে দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্টে সরকার পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এটি গ্রহণ করে কেউ যদি আসে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। এতো দুর্নাম নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মাজিদ বলেন, বেসিক ব্যাংকে বেশ কিছু ঋণের অনিয়ম হয়েছিল। আমরা অনিয়মগুলো চিহ্নিত করে ঋণ আদায় ও পুনঃতফসিল করি। কিন্তু দেখা গেছে পুনঃতফসিল করা ঋণও আবার খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। এখন নন পারফরমেন্স লোন ৫৯ শতাংশে এসেছে। পূর্বে যা ছিল ৬৭ শতাংশ। এ অবস্থায় আমাদের মূলধন সহায়তা প্রয়োজন। তা পেলে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।