কোনো প্রভাবের কারণে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে থাকলে দুদক চেয়ারম্যানে ইকবাল মাহমুদেরই তার নিজ পদ থেকে সরে যাওয়ার উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ ফজলে নূর তাপস।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাতে দেখেছি, বেসিক ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক খাতে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটার মূল ব্যক্তি হলেন বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু। যার কারণে সরকার তাকে সেই পদ থেকে অপসারণ করেছে। কিন্তু আজ অবধি বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত যতগুলো দুর্নীতির মামলা হয়েছে, আমরা লক্ষ্য করেছি শুধুমাত্র কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদেরকে সেসব মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে আজ অবধি কোনো মামলা হয়নি। যদিও তার স্বেচ্ছাচারিতা ও একক সিদ্ধান্তে ঋণ জালিয়াতিগুলো ঘটেছে। তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। আমাদের স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন তদন্তেও তা প্রতীয়মান হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি কয়েক দফা তাকে (আব্দুল হাই বাচ্চু) ডেকে জিজ্ঞাসবাদ করা হয়েছে। কিন্তু আজ অবধি তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়নি। তাই আমরা মনে করি, জাতি মনে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি বিরোধী যে অভিযান আরম্ভ করেছেন, শুদ্ধি অভিযান আরম্ভ করেছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে (বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি) দুদকের জবাবদিহিতা আবশ্যকীয়। কেন এখন পর্যন্ত আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, জাতি তা জানতে চায়।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘দুদক চেয়ারম্যান যদি বলে থাকেন বা বলতে চান বা মনে করেন যে, তিনি কোনো প্রভাবের কারণে ব্যবস্থা নেননি, তাহলে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। সে কারণে তার অবশ্যই পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত।
আর যদি উনি (দুদক চেয়ারম্যান) মনে করেন যে, তিনি কোনো প্রভাব দ্বারা বা কারো কথায় প্রভাবিত হবেন না, তাহলে অবশ্যই জাতি মনে করে, আমরা মনে করি শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে মামলা করা হোক, তাকে গ্রেপ্তার করা হোক, জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।’
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা, গুলশান ও শান্তিনগর শাখা থেকে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে নিয়মবহির্ভূতভাবে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপে ২০১৪ সালের ২৫ মে অপসারিত হন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজি ফখরুল ইসলাম। তার আগে ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। তার কয়েকদিন পরে অর্থাৎ ২০১৪ সালের ৪ জুলাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসায় গিয়ে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট দুদকের অনুসন্ধানী দল বেসিক ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করলেও তাতে আবদুল হাই বাচ্চুর নাম ছিল না।