চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব নিয়োগ এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে হোক

এনটিআরসিএ কর্তৃক সর্বশেষ সুপারিশকৃত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (এমপিও, নন-এমপিও এবং অন্যান্য) প্রায় চল্লিশ হাজার শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটি সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।

যদিও নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত শিক্ষকদের মধ্যে অনেকের পক্ষ থেকে কিছু অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এবং অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনটিআরসিএ ইতোমধ্যে তাদের বক্তব্যও পেশ করেছে।

তবে, সামগ্রিকভাবে শিক্ষক নিয়োগের সর্বশেষ প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং যোগ্যতাভিত্তিক হয়েছে বলে অনেকেই বলছেন। পুরো প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দল কিংবা সরকারি কোনো হস্তক্ষেপের অভিযোগ কেউ তোলেনি।

মূলত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে স্কুল/কলেজের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতি বন্ধ করতে সরকার এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের বিদ্যমান আইনটি জারি করেছিল তার আগের মেয়াদে। এই আইনের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেবল সহকারী শিক্ষক পদে নতুন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করতে পারে এনটিআরসিএ। নিয়োগপত্র প্রদান ও নিয়োগ অনুমোদনের ক্ষমতা আগের মতো কমিটি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের হাতে থাকলেও প্রার্থী বাছাই কিংবা তাদের পছন্দসই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা একেবারেই খর্ব করা হয়েছে।

সরকারী তত্ত্বাবধানে শিক্ষক নিয়োগের চলমান প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত ও আশানুরূপ না হলেও দেশের সুধী মহলে তা প্রশংসিত হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভবিষ্যতে সরকার সরাসরি ভূমিকা নেবে এটা সবার প্রত্যাশা।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় আক্ষেপ হলো, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদ (প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহ-প্রধান ও অফিস সহকারী) সহ চতুর্থ শ্রেণির পদগুলো এখনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির হাতে ন্যস্ত রয়েছে। পরিচালনা কমিটির সভাপতি ব্যক্তি/দলীয় স্বার্থে সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ ও ন্যায়বহির্ভূত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার/তাদের পছন্দসই অযোগ্য ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহ-প্রধান পদে নিয়োগ প্রদান করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ব্যাহত করছে। অথচ একটি প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠু, সুন্দর এবং সুচারুভাবে পরিচালনা করতে এই পদগুলোই মুখ্য ভূমিকা পালন করে।এনটিআরসিএ-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সরকার যদি সত্যিই চায়, দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মনীতি এবং দুর্নীতিমুক্ত হয়ে শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হোক, তাহলে অনতিবিলম্বে সহকারী শিক্ষকদের মতো প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহ-প্রধানসহ অন্যান্য পদগুলোও সরকারি উদ্দ্যোগে নিয়োগ হওয়া উচিত।

অন্যথায়, এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠান হিসেবে যেমন পূর্ণাঙ্গ হয়ে উঠবে না, তেমনি যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষক নিয়োগের সরকারি উদ্যোগটিও কাঙ্ক্ষিত ফল পাবে বলে মনে হয় না।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)