সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরুতে সম্পন্ন হলো ভরতনাট্যম নাচের বিশেষ অনুষ্ঠান। ‘এভরি ফ্রাইডে কালচারাল ইভিনিং’-নামের এ অনুষ্ঠানে টানা দেড় ঘন্টা ভরতনাট্যমের পরিবেশনায় বেঙ্গালুরুবাসীকে মুগ্ধতা ছড়ালেন বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পী জুইয়েরিয়াহ মৌলি।
‘এভরি ফ্রাইডে কালচারাল ইভিনিং’-এর এই আসরে নিয়মিত পরিবেশনের সুযোগ পান ভারতের পেশাদার শাস্ত্রীয় নৃত্যের শিল্পীরা। সেই মঞ্চে এবার নাচ করার সুযোগ পান বাংলাদেশের এই শিল্পী। আর সুযোগ পেয়েই ভূয়সী প্রশংসাও অর্জন করলেন তিনি।
বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পী জুয়েইরিয়াহ মৌলি ভরতনাট্যমে স্নাতকোত্তর করছেন ব্যাঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিসিআর স্কলারশিপে। শুধু যে একাডেমিক শিক্ষা নিতেই ব্যস্ত তিনি তাই নন, এর সাথে সাথে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে একের পর এক অনুষ্ঠানে-আয়োজনে অংশগ্রহণ করছেন এককভাবে কিংবা দলীয় পরিবেশনায়। এর অংশ হিসেবে এবার কানাড়ার ডিপার্টমেন্ট অব কানাড়া এন্ড কালচার, আইসিসিআর এর আয়োজনে দেড় ঘন্টার নৃত্য পরিবেশন করেন ব্যাঙ্গালুরুর ভারতীয় বিদ্যাভবনে।
ভরতনাট্যম এর পূর্ণ মারগাম ছিল এই নৃত্য পরিবেশনার অংশ যা লাইভ সংগীত পরিবেশনার সাথে সাথে উপস্থাপন করেন মৌলি। পুষ্পাঞ্জলি এবং তিলানা নৃত্যের এ অংশগুলো যৌথভাবে পরিবেশন করেন আরেকজন নৃত্য শিল্পী অঞ্জনা রামেশ এর সাথে। সংগীত পরিবেশনে ছিলেন নাট্টুভাঙ্গাম কির্তী রাম গোপাল, ভোকালে ছিলেন নন্দকুমার উন্নিকৃষ্ণন। মৃদঙ্গ বাজিয়েছেন শ্রী জনার্ধন এবং শ্রী কার্তিক সত্যভালি।
এ বিষয়ে জুয়েইরিয়াহ মৌলি বলেন, আমি আমার গুরুদের প্রতি কৃতজ্ঞ আমাকে এ পথ চিনিয়ে দেওয়ার জন্য। উৎসাহ আর অনুপ্রেরণা যোগানোর জন্য। আর আমার মা-বাবার প্রতিও অশেষ কৃতজ্ঞতা আমার উপর ভরসা রাখার জন্য। সবসময় সাপোর্ট করার জন্য। সবার আশির্বাদ চাই যাতে আরও ভালো শিখতে পারি, জানতে পারি। আরও ভালো ভালো কাজ করতে পারি। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যেন বাংলাদেশের নাম আরও অনেক মঞ্চে নিয়ে যেতে পারি- এটাই নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা আমার।
এছাড়াও গত বছর অ্যাসোসিয়েশন অব ভরতনাট্যম আর্টিস্ট অব ইন্ডিয়ার আয়োজনে ভারতের চেন্নাইতে অনুষ্ঠিত ‘আভায় প্রবাসী উৎসব’ এ জুয়েইরিয়াহ মৌলির পরিবেশনার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোন শিল্পীর উপস্থিতির ঘটনা ঘটে সে উৎসবে। ব্যাঙ্গালুরুর শিক্ষাজীবনের সাথে সাথে তামিলনারুর হনসুর নাট্যঞ্জলি, ব্যাঙ্গালুরুর সাঁই নৃত্যোৎসব, গুজরাটের গির্নার উৎসব, আওরাঙ্গবাদের আরু আওরাঙ্গবাদ নৃত্যোৎসবসহ অনেক উল্লেখযোগ্য উৎসবে ও আয়োজনে বাংলাদেশের নাম পৌঁছে দিচ্ছেন মৌলি। নৃত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য পেয়েছেন নাট্য কলামনি ও গির্নার রত্ন পদবীও।