বাংলাদেশে নারী জাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব কবি বেগম সুফিয়া কামালের ২২ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯১১ সালে বরিশালের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সুফিয়া কামাল।
পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন এবং তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন।
১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ কার্ফু উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেন।
সাঁঝের মায়া, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলি এবং একাত্তরের ডায়েরী তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন তিনি। এজন্য বাংলার মানুষ তাঁকে জননী সাহসিকা উপাধিতে ভূষিত করে। সুফিয়া কামাল নিজ উদ্যোগে শুধু নিজেকেই শিক্ষিত করেননি, পিছিয়ে পড়া নারীসমাজকে শিক্ষিত করে তোলার দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। সুফিয়া কামাল দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশি পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পদক ও সোভিয়েত লেনিন পদক।