বিশ্বের প্রথমে ৫-জি চালু করা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে দেশ সুপার ফাস্ট গতির ৫-জি যুগে পথ চলা শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী শেষে এই আশা প্রকাশ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
‘বাংলাদেশ ফাইভ জি সামিট’ নামের এই আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন: নিত্য-নতুন প্রযুক্তির প্রতি আমার সংবেদনশীলতার জন্য আমাকে ‘টেকি’ (প্রযুক্তি প্রেমী) বলা যেতে পারে। প্রযুক্তি দুনিয়ায় যা কিছু নতুন আসে সেগুলো আমি আমার জন্য এবং দেশের জন্য চাই। বিশ্বজুড়ে এখন ৫জি নিয়ে আলোচনা চলছে। আজ বাংলাদেশেও আমরা ৫জি আলোচনা শুরু করলাম।
দেশের প্রযুক্তি অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে জয় বলেন: আপনারা হয়তো অনেকেই ভুলে গেছেন প্রায় ১০ বছর আগে প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ কোথায় ছিলো। প্রযুক্তিতে দারুণ পিছিয়ে থাকাদের তালিকায় ছিলো বাংলাদেশ, বিশেষ করে টেলিযোগাযোগের অবকাঠামোতে ছিলো সবচেয়ে পিছিয়ে। টু জি’র ওপর নির্ভর করতে হতো। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের তেমন প্রচলন ছিলো না। বর্তমান প্রজন্ম ইন্টারনেটের দাম বেশি বলে অভিযোগ করে। কিন্তু তারা দেখেনি এই দেশে ১ মেগাবাইট ইন্টারনেট সংযোগে প্রতি মাসে ১ হাজার ডলার খরচ পড়তো। গত পাঁচ বছরের মধ্যে ইন্টারনেটের মূল্য ৯৯ শতাংশ কমাতে আমি রেগুলেটরদের ওপর চাপ দিয়েছি। মাত্র ৬ বছরে বাংলাদেশকে ১জি, ২জি থেকে ফোরজিতে নিয়ে এসেছি। আজ থেকে ৫ বছর আগে আওয়ামী লীগের হাত ধরে দেশে থ্রিজি আসে। তবে এটা স্থাপন করতে সময় লেগেছিলো। অবস্থা বদলেছে, মাত্র কয়েক মাস আগে চালু করা ফোরজি দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে। ফোরজি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। ফেব্রুয়ারিতে চালুর পর ঢাকা ছাড়িয়ে ফোরজি এখন দেশের উপজেলা পর্যায়ে। এখন মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতের সময়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম সুলভ ইন্টারনেটের দেশ। সবই সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিকল্পনায়, আমার দেয়া অব্যাহত তাগিদে। ৫জি নিয়ে আমার লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্বে ৫জি চালু করা দেশগুলোর কাতারে বাংলাদেশকে রাখা।
৫জি চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন: আগামী মেয়াদে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশে ৫জি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। এবছরের শেষে নির্বাচন আসছে, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যদি আবারও আপনারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেন তাহলে আগামী মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আমরা বাংলাদেশে ফোরজি আনবো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন: প্রযুক্তি বিকাশের শুরু থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বের চেয়ে পিছিয়ে ছিলো। বিনামূল্যে সাবমেরিন কেবল দেয়া হলেও আমরা না নিয়ে পিছিয়ে থেকেছি। এখন বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে টেলিযোগাযোগের দ্রুতগতির সর্বাধুনিক সংস্করণ ৫জি শুরুর দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বিশেষ অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন: আওয়ামী লীগ সময়ের চেয়ে এগিয়ে থেকে ভাবে। তাই প্রযুক্তি বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশে ফোরজি চালুর পরপরই আমরা ৫জি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, হুয়াওয়ের সাউথ-ইস্ট এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জেমস উ এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝ্যাং জেং জুন প্রমুখ ।