চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘বিশ্বের সেরা অর্থমন্ত্রী’র সম্মানে ভূষিত আ হ ম মুস্তফা কামাল

‘ফাইন্যান্স মিনিস্টার অব দ্য ইয়ার ২০২০’ অর্থাৎ বিশ্বের সেরা অর্থমন্ত্রীর সম্মানে ভূষিত হয়েছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদপত্র গ্রুপ ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এর প্রকাশনা দ্য ব্যাংকার সারা বিশ্বের ৫ জন অর্থমন্ত্রীকে এই সম্মান দিয়েছেন।

ইউরোপ থেকে আয়ারল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী পাসক্যাল ডোনোহি, আমেরিকা থেকে ব্রাজিলের এর অর্থমন্ত্রী পাওলো গুয়েডেস, মধ্রপ্রাচ্য থেকে বাহরাইনের অর্থমন্ত্রী শেখ সালমান বিন খালিফা আল খালিফা, আফ্রিকার রুয়ান্ডার অর্থমন্ত্রী উজিয়েল ডাগিজিমানা এবং বাংলাদেশ থেকে আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অন্য ৪ জন একেকটি অঞ্চলের সেরা অর্থমন্ত্রী, তবে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীকে দ্য ব্যাংকার পত্রিকাটি বলেছে: বিশ্বের এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেরা অর্থমন্ত্রী।

১৯২৬ সাল হতে পত্রিকাটি প্রকাশিত হচ্ছে, যা পৃথিবীর ব্যাংকিং সেক্টরের ইন্টেলিজেন্স হিসেবে খ্যাত। তারা ফিন্যান্স মিনিস্টার অব দ্য ইয়ার পুরস্কারটি ২০০৪ সাল থেকে প্রচলন করেছে।

বাংলাদেশের কোন অর্থমন্ত্রী প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। গত বছর এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী, তার আগের বছর ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং ২০১৭ সালে আর্জেন্টিনা’র অর্থমন্ত্রী ফিন্যান্স মিনিস্টার অব দ্য ইয়ার হয়েছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বিরল এ পুরস্কারটি দেশের সর্বস্তরের সকল জনগনের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেছেন: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করেই এটি অর্জিত হয়েছে।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর আ হ ম মুস্তফা কামালকে তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। ২০১৪-২০১৮ সময়কালে সফলভাবে পরিকল্পনামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অর্থমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই তিনি চলমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিকে সচল রাখা ও আর্থিক খাতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন যা অচিরেই বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করাসহ ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনে। পরপর তিনটি অর্থবছর ৭ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হওয়ার পর গত বছর ৮.১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্ব প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব বিস্তারকারি শীর্ষ ২০টি দেশের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধি টেকসই করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থমন্ত্রী চলতি অর্থবছর অনেকগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রীর নীতি নির্ধারণী অনেকগুলো উদ্যোগের মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক খাত ও রাজস্ব খাতের সংস্কার প্রণিধানযোগ্য। এছাড়া রয়েছে- ব্যাংক সুদের হার নয় শতাংশে নামিয়ে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ। রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংকগুলোর যৌক্তিক কারণে খেলাপি হওয়া ঋণ পুনঃতফসিলকরণের উদ্যোগ গ্রহণ। ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি-দের দেউলিয়া ঘোষণাসহ তাদের সম্পদ ‘এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী’র মাধ্যমে গ্রহণ করে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ। ব্যাংকের পরিবর্তে ক্যাপিটাল মার্কেট হতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজারে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ। বন্ড মার্কেট চালুর উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রথমবারের মতো বাংলা টাকা বন্ড লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ-এ তালিকাভুক্তকরণ। কর আদায়ে ভ্যাট আইন চালু করা, কাস্টমস আইন সংস্কার করা এবং আয়কর আদায়ের নেট উপজেলা পযন্ত বিস্তারের উদ্যোগ গ্রহণ। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রীর এমন অর্জনে ছোট্ট আনুষ্ঠানিকতা ছিল চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে। বিশেষ এই ক্ষণটিতে অর্থমন্ত্রীকে পেয়ে অভিনন্দন জানান চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। এসময় দেশের সব মানুষকে এই সম্মান উৎসর্গ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।