বিশ্বব্যাংকের নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় বাংলাদেশের জায়গা করে নেওয়াকে দেশের অর্থনীতিবিদরা মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, স্বীকৃতির এই অর্জন অনেক সম্ভাবনার দরোজা খুলে দেবে। তবে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জেরও মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেছেন তারা।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, এই অর্জনের ফলে দেশের সামনে যেমন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে তেমনি অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়াবে আমাদের সামনে। উন্নত দেশের মাথাপিছু আয়ের যে সীমারেখা, সাড়ে চার হাজার থেকে সাড়ে বারো হাজার মার্কিন ডলার, সেদিকেই এখন আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সম্ভাবনার একটি বড় জায়গা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আস্থার জায়গা। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে ঋণ সুবিধা নিতে গেলে ঋণদাতা দেশগুলো আমাদের কম ঝুঁকিপূর্ণ মনে করবে। বিশ্বব্যাংক বা এডিবি থেকে যেসব সহযোগিতা দেওয়া হয় সেসব ক্ষেত্রে শর্তও অনেক কমে আসতে পারে।
তবে মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বাংলাদেশের অবস্থা এখনো অনেকটা অগোছালো। সেটাকে গুছিয়ে তোলাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশে এখনও ধনী ও দরিদ্রের বৈষম্য রয়েছে। দেশের মানুষের আয় বৈষম্য কমাতে হবে। বাংলাদেশে এখনো ৪ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। এই জনগোষ্ঠীকে কিভাবে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সেদিকে বাড়তি নজর দিতে হবে।
সেক্ষেত্রে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশের পরিচিতি অান্তর্জাতিক কিছু সহযোগিতা কমিয়ে দিতে পারে যা দারিদ্র্য বিমোচনে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে।
প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে আয় সঙ্কট কমিয়ে আনার পরামর্শও দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা সম্পদ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ আরো শক্ত করার মধ্য দিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই একসময় উন্নত দেশের তকমা অর্জন করতে পারবে বাংলাদেশ।