ইংল্যান্ডের ১৫ সদস্যের প্রাথমিক বিশ্বকাপ দলে ঠাই পাননি জফরা আর্চার। ২৩মে পর্যন্ত দলে পরিবর্তন আনতে পারবে ইংলিশরা। তার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের একটি ওয়ানডে সিরিজ খেলবে ইয়ন মরগানের দল। সেই সিরিজে ভালো করতে পারলেও বিশ্বকাপের দরজা খুলে যেতে পারে ক্যারিবীয় বংশোদ্ভূত এ পেস-অলরাউন্ডারের।
কিন্তু ইংল্যান্ডের নতুন অলরাউন্ডার নিজে বলছেন, বিশ্বকাপ নিয়ে তিনি অনেক বেশি চিন্তা-ভাবনা করছেন না এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজকে একটি সাধারণ সিরিজ হিসেবেই দেখছেন। তাছাড়া এতো কাছে নয়, অনেক দূরেই চোখ রাখছেন আর্চার।
আর্চারের কথায়, ‘একটা একটা করে ম্যাচ দেখতে চাই। আমি এটা নিয়ে অনেক বেশিকিছু ভাবছি না। এখানে যদি ভালো করি, তাহলে হয়তো আমার বিষয়টা সামনে এগোবে। কিন্তু আমি বিশ্বকাপ দলে জায়গা নিয়ে ফোকাস করছি না। অন্যরা এটা নিয়ে ভাবতে পারে।’
ইংল্যান্ড দলে যারা জায়গা পেয়েছেন তারা সবাই অনেকদিন ধরে একসঙ্গে খেলছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে আর্চারের মন্তব্য, ‘আমি ভালো খেলার জন্য সবকিছু করব এবং আশাও রাখব। তবে বিশ্বকাপের জন্য আমি আমার হৃদয় দিয়ে চেষ্টা করব না। স্পষ্টতই, যারা অনেকদিন ধরে একসাথে খেলছে তারাই সম্ভবত আগে জায়গা পাওয়ার দাবিদার। তাই আমি যদি বাদ পড়ে যাই তাতে আমার খুব খারাপ লাগবে না।’
গত শুক্রবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ড জার্সিতে ওয়ানডে অভিষেক হয় আর্চারের। নিজের প্রথম ম্যাচে ভালোই নজর কেড়েছেন তিনি। দলের ৪ উইকেটে জয় পাওয়া ম্যাচে পল স্টার্লিয়ের দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন আর্চার। তাছাড়া প্রথম আট ওভারে বিনা উইকেটে ৪০ রান তুলে ফেরার পর আইরিশ ইনিংসে প্রথম ধাক্কা দেন তিনিই। দরকারী সময়ে মার্ক আদিয়ারকে আউট করে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে উইকেট তুলে নেন আর্চার।
ম্যাচ শেষে আর্চার বলেছেন, ইংলিশ জার্সিতে এতো ‘দ্রুত’ অভিষেক হবে সেটা তিনি কল্পনাও করেননি, ‘এটা হয়ে গেছে! আমি এখন এখানে (ইংল্যান্ড দলে)। আমি যা আশা করেছিলাম, তার চেয়ে এটা (অভিষেক) একটু আগেই হয়ে গেল। আমি আসলে ২০২৩-এ চোখ রাখছি, তবে আগে আগে সুযোগ পেয়ে শিহরিত। একটা গ্রেট সময়ে একটা গ্রেট দলের সঙ্গে আছি।’
সাসেক্সে খেলা আর্চারের বাবা একজন ব্রিটিশ। তার নিজেরও ব্রিটিশ পাসপোর্ট রয়েছে। ১ জানুয়ারি ইসিবি রেসিডেন্সি আইনে পরিবর্তন আনার পর মার্চে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন আর্চার। এই সুযোগ পাওয়ার পর ইসিবিকে ধন্যবাদও জানান আর্চার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এপর্যন্ত ১৪টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। তবে টি-টুয়েন্টি বেশি নজর কেড়েছেন। ঘণ্টায় ৯০ মাইল বেগে বল করার সক্ষমতার জন্য ক্রিকেট বিশ্বের নজরে আর্চার। আইপিএলে দুই ইংলিশ তারকা জস বাটলার ও বেন স্টোকসের সঙ্গে রাজস্থান রয়্যালসে খেলেছেন।
ইংল্যান্ডের সমর্থক থেকে শুরু করে মাইকেল ভন ও সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকেই আর্চারের হয়ে সওয়াল করেছেন। তাকে দলে নেয়ার ব্যাপারে অবশ্য ইংল্যান্ড দলের কারো কারো আপত্তি ছিল। অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস যেমন বলেছিলেন, বিশ্বকাপের দলে আর্চারকে নেয়াটা ‘নৈতিকভাবে ন্যায্য হবে না’।
আর্চার যদিও বলছেন, দল তাকে সাদরেই গ্রহণ করেছে, ‘বেশ বড়সড়ভাবেই স্বাগত জানানো হয়েছে। এখানে আসার আগে বেশিরভাগ খেলোয়াড়কেই আমি চিনতাম। আপনারা জানেন এমনকিছু লোকের সাথে একটি নতুন দলের মধ্যে আসলে বেশ ভালোই লাগে। কখনো কখনো মিডিয়া মানুষকে ভুলভাবে প্রচার করে। যখন থেকে আমি এখানে এসেছি তখন থেকে অপ্রীতির কোনকিছু অনুভব করিনি। সত্যিই দারুণভাবে আমাকে স্বাগত জানানো হয়েছে, আমি খুবই খুশি।’