দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে যাবে বাংলাদেশের প্রস্তুতি। বিশ্ব আসরে কেমন হবে টাইগারদের স্কোয়াড? সেটি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বর্তমান ওয়ানডে দল থেকে খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ দেখছেন না কেউই।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের আকরাম খান মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাদের ভাবনার কথা।
নাজমুল হাসান
চমকের বিষয় এখানে নেই। আমরা ১৫ জনের একটা দল বানাব। আপনি যদি নামগুলো দেখেন তাইলেই বুঝবেন। তামিম আর দুই ওপেনার। ধরে নিচ্ছি সৌম্য, লিটন খেলে তাহলে তো শেষ (ওপেনার কোটা)। সাকিব, মুশফিক, রিয়াদকে তো বাদ দিতে পারেন না। তাহলে ছয়জন শেষ। এবার তিনটা ফাস্ট বোলার- মোস্তাফিজ, মাশরাফী, রুবেল আছেই। এরপর অন্তত একটা বেশি তো নিতেই হবে। কারণ পেসাররা বেশি চোটে পড়ে। তাহলে তাসকিন আর সাইফউদ্দিন চলেই এল। এগারো হয়ে গেল।
স্পিনার হিসেবে মিরাজকে তো নিতে হবে। বারোজন হল। মিডল অর্ডারে ব্যাকআপ নিতে হবে, সেখানে মিঠুনের নাম আছে, সাব্বির আছে। এর বাইরে নতুন কারও সম্ভাবনা খুবই কম। বলছি না যে হবে না। কারণ আজকেও আমরা কথা বলছিলাম কিছু করা যায় কিনা, কিছু করা যায় কিনা।
ঘরোয়াতে যতই ভালো করুক না কেনো, একটা নতুন ছেলের, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক খেলার মধ্যে বিরাট পার্থক্য। উপমহাদেশে যদি হতো তাও এক কথা। কাজেই যে যতই ভালো করুক, হুট করে এসে একদম বিশ্বকাপ খেলে ফেলবে এই সম্ভাবনা খুবই কম।
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা
আমি এই(দল) নির্বাচনের পার্টে নেই অবশ্যই। আগেও স্পষ্ট করেছি, এখনও করছি। দল নির্বাচন আমার হাতে নেই। কিন্তু যে ১৫জনই আসুক না কেনো, তারা পারফর্ম করে আসছে কি-না সেটি বিষয় না। আমাদের মূল ফোকাস থাকবে আয়ারল্যান্ড সিরিজ এবং বিশ্বকাপে আমরা দল হিসেবে কেমন করছি সেটা।
সুতরাং এখানের পারফরম্যান্স আমি আগের-পরের কথা টেনে এনে বলছি যে, এখানে অনেক উইকেট পেয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা ধুঁকেছি। আমার মতো সিনিয়র ক্রিকেটার বা অন্য যারা আছে তারাও সংগ্রাম করেছে। আবার এখানে খারাপ করেও দেখা গেছে ওখানে যেয়ে আমরা ভালো করেছি। তাই আকাশ আর পাতাল ব্যবধান দুটি জায়গার মধ্যে।
এই কারণে আমি বলছি, মানসিক দিক থেকে কে তৈরি থাকবে তার উপরে অনেককিছু নির্ভর করবে। হয়তো দেখা গেল এখানে কেউ লিগ খেলছে ঠিকই, তবে সে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ে কাজ করছে, যেটি বিশ্বকাপে তার প্রয়োজন হতে পারে। আমি মনে করি তার ঐদিকেই নজর থাকা উচিৎ, যে জিনিসটি সে চিন্তা করছে। সুতরাং মানসিকভাবে প্রস্তুত মানে আপনিও প্রস্তুত। সেটাই বোঝাচ্ছি আসলে। তবে যারা রান করছে বা ভালো করছে সেটি নির্বাচক প্যানেল ঠিক করবে যে কারা যাবে আর কারা যাবে না।
আকরাম খান
দেখেন, টিম কিন্তু প্রায় সেট করা। ১৫জনের মধ্যে থেকে হয়ত ১৩/১৪জন নিশ্চিত হয়েই আছে। একটা জায়গায় হয়তো এই (ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ) পারফরম্যান্স কাউন্ট হবে। নিঃসন্দেহে যারা নির্বাচক আছে তারা বিপিএল এবং ঢাকা লিগের পারফরম্যান্স কাউন্ট করবেনই।
বাংলাদেশ দল গত চার-পাঁচ মাসে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলেছে। তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। পরে বিপিএল চলে এল। সবশেষে আমরা চলে গেলাম নিউজিল্যান্ডে। তাতে কিন্তু মানসিক ও শারিরীকভাবে তারা খুবই ক্লান্ত। এখন আমরা বিশ্রাম দিয়েছি। কিছু খেলোয়াড় (তামিম, মুশফিক) ড্রাফটে ছিল না, তারা কিন্তু বিশ্রাম নিচ্ছে। এটা খুবই ইতিবাচক একটা দিক।
সবাই জানেন একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে নিউজিল্যান্ডে। আমরা আরও কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে দিয়েছি তাদের এবং তারা নিজেরা পরিবারের সঙ্গে আছে। আমরা দুই-তিন দিনের মধ্যে ওদের সাথে বসব এবং ওরা মানসিক কী অবস্থায় আছে সেটা জানব এবং যা যা দরকার সেটা করব।