বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে বিভিন্ন পদে ভুয়া চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রার্থীদের কাছ অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জড়িত চক্রের মূল হোতা ও সহকারীকে আটক করা হয়েছে।
আটকরা হলেন, অহিদুজ্জামান (৪০) এবং তার সহযোগী যশোর শার্শা থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মীর আশরাফুল ইসলাম (২৭)।
গতকাল শুক্রবার যশোর সদর উপজেলার বিমানবন্দর এলাকা থেকে সন্ধ্যায় দুই প্রতারককে আটক করে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করেছে বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ।
শনিবার বিকালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক মো. নূর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নামে জনসাধারণের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারক চক্রটি। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা যশোর বিমানবন্দর এলাকা থেকে বিমান বাহিনীতে বেসামরিক পদে ভূয়া নিয়োগ বানিজ্যে জড়িত চক্রের মূল হোতা ও তার সহযোগীকে আটক করে।
সেসময় তাদের কাছ থেকে কয়েকটি ভুয়া নিয়োগ পত্র, দুইটি ওয়াকিটকি সেট এবং বিমান বাহিনী’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামে দুইটি সীলমোহর উদ্ধার করা হয়।
আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং সাথে থাকা ওয়াকিটকি প্রদর্শন করে নিজেকে কখনও পুলিশ সদস্য, কখনও ডিবি সদস্য, কখনও বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, আবার কখনও বা সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করত।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চক্রের মূল হোতা অহিদুজ্জামান চাকরিপ্রার্থীদের ভুয়া নিয়োগ পত্র দিয়ে বিমান বাহিনী’র বিভিন্ন পদবী’র কর্মকর্তাদের নাম ও স্বাক্ষর এবং বিমান বাহিনী’র অফিস সীল জালিয়াতি করে প্রতারণামূলক নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ভুয়া দিত যা বেসামরিক পরিমন্ডলে বিমান বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন করে আসছিল।
বিষয়টি বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে যশোর বিমানবন্দর এলাকা থেকে অহিদুজ্জামান ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়।
প্রতারক চক্রটি যশোর ও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার অসহায় বেকার চাকরি প্রার্থীদের নানান অপকৌশলে বিমান বাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত। এই চক্রটি আনুমানিক ১০০/১৫০ জন প্রার্থীকে চাকুরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানানো হয়, বিমান বাহিনীতে টাকার বিনিময়ে চাকরি প্রাপ্তির কোন সুযোগ নেই বরং এটা সম্পুর্ণই প্রতারণা। টাকার বিনিময়ে বিমান বাহিনীতে চাকরি প্রাপ্তির এই প্রতারণার হাত থেকে সকল আগ্রহী প্রার্থী ও তাদের সংশ্লিষ্ট অভিভাবকগণকে সাবধান থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অহিদুজ্জমান ও তার সহযোগী মীর আশরাফুল ইসলামকে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।