মামলার সঠিক তদন্তের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন (স্টেটমেন্ট) বক্তব্য কাম্য নয় উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য আসলে পরবর্তীতে সত্য ঘটনা উদঘাটন হলেও সাধারণ মানুষ নানা রকম ধারণা পোষণ করে।
কক্সবাজারে পর্যটককে দলবেধে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিটের শুনানিতে আজ মঙ্গলবার রিটকারী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূইয়া রাসেল আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড কক্সবাজারের ঘটয়ায় পুলিশ ও র্যাবের বক্তব্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বিভিন্ন মিডিয়া তাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য এসেছে। তাই এঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চাচ্ছি।
সেসময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন (স্টেটমেন্ট) বক্তব্য কাম্য নয়। ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য আসলে পরবর্তীতে সত্য ঘটনা উদঘাটন হলেও সাধারণ মানুষ নানা রকম ধারণা পোষণ করে।’
মিডিয়া তথ্য খুঁজবেই তাই মিডিয়াকে দোষ দিয়ে লাভ নেই উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেন, ‘গ্রেফতার-মামলা কিংবা তদন্তের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি এজেন্সি আরেকটি এজেন্সিকে সহযোগিতা করতে পারে। তবে তদন্ত চলাকালে তদন্ত কর্মকর্তাদের কথা কম বলাই ভালো।’
আদালত আজ কোন আদেশ না দিয়ে রিটটি স্যান্ডওভার রেখে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করে এটা বলতে বলেন, ‘তারা যেন ভিন্ন ভিন্ন (স্টেটমেন্ট) বক্তব্য না দেয়।’
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আবদুল্লাহ আল হারুন ভূইয়া রাসেল ও আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নিলু। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারা, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ ও দেলোয়ার হোসেন।
কক্সবাজারে পর্যটককে দলবেধে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূইয়া রাসেল গতকাল হাইকোর্টে রিটটি করেন।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারসহ ৬ জনকে বিবাদী করা রিটে ধর্ষণের অভিযোগে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী পদক্ষেপের নির্দেশনার পাশাপাশি রুল চাওয়া হয়।
গত ২২ ডিসেম্বর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে তুলে নিয়ে তার স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে একটি আবাসিক হোটেলে দলবেধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
পরদিন ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও তিনজনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন।
পরে ওই ঘটনা নিয়ে পুলিশ ও র্যাব ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দেয়। ঘটনার শিকার নারী ও তার স্বামী গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, পুলিশের শেখানো কথা তাদেরকে বলতে হয়েছে আদালতে। এমনকি মামলা করতে টাকাও দিতে হয় পুলিশকে।