উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক জেলার হাজার হাজার মানুষ।
রাজশাহী
উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে রাজশাহীতে পদ্মার পানি বেড়েই চলেছে। মহানগরী এলাকায় পদ্মার পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে জেলার গোদাগাড়ী, পবা, বাঘা ও চারঘাট উপজেলার চরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
রাজশাহী মহানগরীতে পদ্মা নদীর ধার এলাকার কাজলা, তালাইমারি, পঞ্চবটি, শ্রীরামপুর, বুলুনপুর এলাকায় শত শত ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে মানুষ। বিশেষ করে জেলার গোদাগাড়ী, পবা, বাঘা ও চারঘাট উপজেলার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চারটি উপজেলার চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে পড়েছে।
তারা চরাঞ্চল ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে জায়গা নিয়েছে। এদিকে শহররক্ষা বাঁধের টিবাঁধসহ বিভিন্ন পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বর্ন্যাতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ চলছে।
নাটোর
পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় নাটোরের লালপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১৮টি চরাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ফসলি জমিতে পানি ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়া এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নাটোরের লালপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পদ্মা নদীর ভাঙনরোধে তৎপর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলে জানিয়েছে নাটোর জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী আল আসাদ।
এখনও পানিবন্দী হয়ে রয়েছে লালপুর, বিলমারিয়া এবং ঈশ্বরদী এই তিন ইউনিয়নের ১৮টি চরের প্রায় তিন হাজার মানুষ।
রাজবাড়ী
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এরই মধ্যে নতুন করে রাজবাড়ী জেলার ৬ ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন জানিয়েছে: পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ৫’শ, গোয়ালন্দ উপজেলায় ৪৭৫, পাংশা উপজেলায় ৫’শ এবং কালুখালী উপজেলায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দী মানুষের জন্য শুকনো খাবার ও চালের বরাদ্দ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। এরই মাঝে নদী ভাঙনের ফলে অন্তত ৫শ’ পরিবার বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার ব্যস্ততম দৌলতদিয়ার লঞ্চঘাট ও ফেরি ঘাট।
পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দেখা দেওয়ায় গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওই এলাকার কৃষকরা বলেন, ভাঙন শুরু হওয়ার গত কয়েক দিনে প্রায় ৫শ’ বিঘা ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।