চকবাজার ট্র্যাজেডির ক্ষত না শুকাতেই আরেক শোকাবহ ঘটনার সাক্ষী হয়ে গেল রাজধানীর সদরঘাটের বুড়িগঙ্গা নদী। বুড়িগঙ্গায় নৌকা ডুবে একই পরিবারের ৬ জনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আরও ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ডুবুরিরা।
বুুড়িগঙ্গার এই দুর্ঘটনা কয়েকদিন আগে ঘটলেও নিখোঁজদের উদ্ধারে ডুবুরিদের বেগ পেতে হয়েছে। চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, বুড়িগঙ্গার পচে যাওয়া কালো পানি ও নদীর তলদেশে আবর্জনার স্তুপের কারণে ‘সাইড স্ক্যান ছোনার’ ব্যবহার করেও মরদেহ খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়েছে ডুবুরিদের।
রাজধানীর প্রাণ হিসেবে পরিচিত এই নদী যেন এখন দূষণের প্রামাণ্য দলিল। বুড়িগঙ্গা দূষণের জন্য হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পকে দায়ী করা হতো। এই শিল্প সরিয়ে নেয়ার পরও বুড়িগঙ্গা দূষিত রূপেই বহাল আছে। কিন্তু এমনটা হচ্ছে কেন? কারণ একটাই, আর তা হলো সদরঘাট থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত দু’পাশ থেকেই নদীতে অনবরত ফেলা হচ্ছে বিষাক্ত বর্জ্য।
তাই ট্যানারি সরিয়ে নেয়ার পর এই বুড়িগঙ্গাকে ঘিরে যে আশার আলো দেখা গিয়েছিল, তা নিভিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন কলকারখানার বর্জ্যের দূষণ। আমরা মনে করি, এসব কল-কারখানার ইটিপিগুলো মনিটরিং করা গেলে এবং নদীকেন্দ্রীক সচেতনতা তৈরি করা গেলে আবারও বুড়িগঙ্গার প্রাণ ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব।
বুড়িগঙ্গায় নৌকা ডুবির ঘটনায় আরেকটি বিষয় সামনে এসেছে। আর তা হলো সারাদেশের লঞ্চ চলাচলের কেন্দ্রস্থল সদরঘাটের মতো জায়গায় এমন ছোট নৌকা চলাচল কতোটা যুক্তিযুক্ত? এ দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে নজর দেবেন বলে আমরা আশা করি। বুড়িগঙ্গার দূষণ ও দখল বন্ধসহ সদরঘাটে একই ধরনের দুর্ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি।