খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫২ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। অর্থাৎ গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ৬.৩৪ শতাংশ দাম বাড়াতে চায় প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য সোমবার রাজধানীর টিসিবি ভবনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানিতে এই প্রস্তাব করেন ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ সারোয়ার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিইআরসি’র চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য মিজানুর রহমান, রহমান মুরশেদ, আবদুল আজিজ খান ও মাহমুদউল হক ভুইয়া, ক্যাবের জ্বালানী বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর যুক্তি তুলে ধরে সাঈদ সারোয়ার বলেন, প্রশাসনিক ব্যয়, পরিচালন ব্যয়, অফিস ভাড়া, জনবল ও মূল্যস্ফীতিজনিত ব্যয়সহ অন্যান্য খরচ বেড়ে গেছে।
এছাড়া গত ৮ বছরে ৯ দফায় বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হয়েছে ২০২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। একই সময়ে খুচরা দাম বাড়ানো হয়েছে ৯০ দশমিক ৬০ শতাংশ। এতে দেখা যাচ্ছে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ধরনের পার্থক্য রয়ে গেছে। অর্থাৎ বিতরণ ব্যয়সহ ইউনিট প্রতি ঘাটতি হচ্ছে ৫২ পয়সা। তাই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিকল্প নাই।
তবে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ডেসকোর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে বলছে, ৫২ পয়সা নয় ডেসকো সর্বোচ্চ আট পয়সা পর্যন্ত দাম বাড়াতে পারে।
কিন্তু দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের চরম বিরোধিতা করেছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন (ক্যাব) ও বাম রাজনৈতিক দলগুলো।
ওই শুনানিতে অংশ নিয়ে দাম বাড়ানোর বিষয়টিকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করেছেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম। কেন বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে এমন প্রশের যথাযথ জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছে ডেসকো।
এই মূহূর্তে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ালে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।
তিনি বলেন, বর্তমানে চালের দাম ঊর্ধ্বগতি, অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বেশি। তাই বিদ্যুতের দাম বাড়লে এসব পণ্যের দাম আরো বেড়ে যাবে। ফলে মানুষের সাংসারিক ব্যয় বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মার্কেটিংয়ের ভাষায়, যে পণ্যের চাহিদা বাড়ে সেই পণ্যে কখনই লোকসান হয় না। বিদ্যুতও সেই রকম পণ্য যার চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাহলে এতে লোকসান হবে কেন আর দামও বা বাড়াতে হবে কেন? এতে বোঝা যাচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়নে যুক্তরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। ফলে লোকসান গুণতে হচ্ছে। যার ব্যয়ভার বহন করতে হয় জনগণকে।
এসময় তিনি দাম না বাড়িয়ে বরং কমানোর অনুরোধ জানায়।