গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চ্যানেল আই থেকে বিদায় নিলেন গুণী অভিনেত্রী রানী সরকার। দুপুর আড়াইটার দিকে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা শেষে লাশবাহী গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় এফডিসির উদ্দেশ্যে।
দুপুর সোয়া ২টার দিকে রানী সরকারের মৃতদেহ বহন করা গাড়িটি প্রবেশ করে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। তাকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে এখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন এই অভিনেত্রীর শুভাকাঙ্ক্ষিরা। রাজনীতি, অভিনয় এবং সংগীত জগতের অনেককেই এ সময় দেখা গেছে।
জানাজা শুরুর আগে রানী সরকারকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে চ্যানেল আইয়ের পক্ষ থেকে কথা বলেন চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ। তিনি বলেন, চ্যানেল আই বরাবরই শিল্পীদের পাশে থাকে। সুখে, দুঃখে সব সময় শিল্পীর কাছাকাছি থাকে। রানী সরকারের সুখে দুঃখেও চ্যানেল আই পাশে ছিলো। রানী সরকারকে সেই ছোটবেলা থেকেই এক নামে চিনি। অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন শিল্পী ছিলেন তিনি। পরকালে তিনি যেনো শান্তিতে থাকেন এই প্রার্থনা করি।
দুপুর আড়াইটার দিকে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে রানী সরকারের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ফকির আলমগীর, বাচসাসের সভাপতি আব্দুর রহমান, বর্তমান সরকারের সংসদ সদস্য নুরন্নবী চৌধুরী শাওন, বাংলাদেশ পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি ও অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চু, নির্মাতা শাহ আলম কিরণসহ বিভিন্ন অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
এ সময় রানী সরকারের বর্ণিল কর্ম জীবন কিছুটা স্মরণ করে বাচসাস সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, ১৯৫৮ সালে চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে পা রাখেন রানী সরকার। প্রায় দীর্ঘ ষাট বছর তিনি অভিনয় জগতেই ছিলেন। প্রথমে তিনি ছিলেন একজন নৃত্যশিল্পী, এরপর বেতার এবং পরবর্তীতে থিয়েটারে কাজ করে বড় পর্দায় অভিষেক হয় রানী সরকারের। ২০১৪ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন।
চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা তুলে ধরে আব্দুর রহমান আরো বলেন, ১৯৭৫ সালে ‘উত্তরণ’ নামে যে সিনেমাটি মুক্তি পায় প্রথমে ছবিটির নাম ছিলো ‘আযান’। যার পরিচালক ছিলেন ফজলুল হক। এই ছবিটিতে আমরা চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরকে প্রথম অভিনয় করতে দেখি। যে চলচ্চিত্রটিতে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রানী সরকার।
চ্যানেল আই বরাবরই শিল্পীদের কাছাকাছি থাকে। তাদের সুখে দুঃখে পাশে থাকে। চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে রানী সরকারের জানাজার মধ্য দিয়ে তাকে আরো একবার সম্মান জানানো গেছে বলে মন্তব্য করেন আব্দুর রহমান।
জানাজা শেষে চ্যানেল আই অনলাইনকে নির্মাতা শাহ আলম কিরণ জানান, এখন আমরা রানী সরকারের মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছি এফডিসিতে। সেখানে তাকে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন চলচ্চিত্র অঙ্গনের মানুষ। এরপর আরো একবার এখানে জানাজা হবে। তারপর তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হবে। সবাই তার বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করবেন।
ছবি: ওবায়দুল হক তুহিন