একসঙ্গে কাজ করেছেন নিজের নির্মিত একমাত্র সিনেমা ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’তে। ঘুরে বেরিয়েছেন দেশ ব্যাপী। কতো না স্মৃতি চোখে মুখে। অথচ বন্ধুসুলভ সেই মানুষটির অন্তিম যাত্রায় মাইক্রোফোনের সামনে বাকরুদ্ধ ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ নির্মাতা মসিহউদ্দিন শাকের। চুপ করে থাকলেন বহুক্ষণ। তারপর খুললেন স্মৃতির ঝাঁপি!
স্থপতি, আলোকচিত্রী এবং পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সিনেমাটোগ্রাফার আনোয়ার হোসেনকে জাতির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে নিয়ে আসা হয় সোমবার সকাল ১১টায়। এরপর পৌনে একটা পর্যন্ত এখানে রাখা হয়। শহীদ মিনার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের প্রাঙ্গণে নেয়ার আগে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয় এবং জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। বাদ যোহর আনোয়ার হোসেনের নামাযে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মিরপুরে অবস্থিত শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।
তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে তার দুই ছেলে আকাশ ও মেঘদূত ছাড়া উপস্থিত ছিলেন তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
তাকে শেষ শ্রদ্ধায় উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, গোলাম কুদ্দুস, ফটোগ্রাফার শহীদুল আলম, নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী, নির্মাতা মসিহউদ্দিন শাকের, মোরশেদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড.মুহাম্মদ সামাদ, বেলায়েত হোসেন মামুনসহ চলচ্চিত্র, সিনেমাটোগ্রাফি, ফটোগ্রাফির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, আমরা বাংলাদেশের শিল্পের ইতিহাস যখন বলবো, বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যখন বলবো তখন আনোয়ার হোসেন এমনিতেই আলোচনায় চলে আসবেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও শিল্পচর্চার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত একটি নাম।
১ ডিসেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেল কক্ষে মৃত্যু হয় আনোয়ার হোসেন এর। ধারণা করা হচ্ছে হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে খ্যাতি থাকলেও বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানের একজন আলোকচিত্রীও ছিলেন আনোয়ার হোসেন। বেশকিছু দিন ধরেই পরিবারসহ তিনি প্যারিসে থাকতেন। ‘সূর্যদীঘল বাড়ী’ ছাড়াও আনোয়ার হোসেন ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’,‘পুরস্কার’, ‘অন্য জীবন’ এবং ‘লালসালু’র জন্য শ্রেষ্ঠ সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছিলেন।