বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন (বিটিআরসি) পরিচালিত অডিটে ১২,৫৭৯.৯৫ কোটি টাকার দাবিকে “আইনগতভাবে ভিত্তিহীন” অভিহিত করেছে গ্রামীণফোন।
মঙ্গলবার এক চিঠিতে এই অডিট প্রত্যাহারের দাবি করে একটি যুক্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বিটিআরসি’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছে গ্রামীণফোন।
গ্রামীণফোন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিটিআরসি গত ২ এপ্রিল একটি দাবিনামার মাধ্যমে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসি’কে ৮,৪৯৪.০১ কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪,০৮৫.৯৪ কোটি টাকা পরবর্তী ১০ কর্মদিবসে পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়।
বিটিআরসি কর্তৃক নিয়োগকৃত জেভিসিএ অব তােহা খান জামান অ্যান্ড কো. নামের একটি অডিট ফার্ম গ্রামীণফোনের ১৯৯৭ সালের যাত্রা থেকে শুরু করে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে ইনফরমেশন অ্যান্ড সিস্টেম অডিট পরিচালনা করে এই টাকা দাবি করে।
এই অডিটে বিটিআরসি’র দাবিকৃত ৮,৪৯৪.০১ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৭৩% বা ৬,১৯৪.৩ কোটি টাকাই হলো সুদ যা ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ধরা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এর আগে বিটিআরসি আরও একটি ইনফরমেশান অ্যান্ড সিস্টেম অডিটের মাধ্যমে ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণফোনের কাছে থেকে ৩,০৩৪ কোটি টাকা পাবে বলে দাবি করে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সেই অডিটের অডিটর নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
‘‘বিটিআরসি ১৯৯৭-২০১১ সময়কালের পূর্ববর্তী অডিটের দাবি নিয়ে একদিকে আদালতে আইনগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ সালের অডিটে এখন ১২,৫৭৯.৯৫ কোটি টাকা দাবি করছে। ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়কালের জন্য বিটিআরসি দুটি দাবি করছে। ’’
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সাথে অনেকবার আলোচনা এবং অডিটরকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করার পরও আমাদের যুক্তিগুলো অডিট প্রতিবেদনে প্রতিফলিত না হওয়া খুবই দুঃখজনক। অডিট চলাকালীন পুরো সময়ে আমরা বারবার অডিট প্রক্রিয়ার ত্রুটিগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু আমাদের মতামতকে দাবিনামায় সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের আগস্টে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে অডিটের প্রতিবেদনের উপরে আনুষ্ঠানিক জবাব দিতে বলে। গ্রামীণফোন নির্ধারিত সময়ে সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও যুক্তি দাখিল করে। কিন্তু বিটিআরসি তাদের দাবিনামায় শুধুমাত্র ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেয়া গ্রামীণফোনের ব্যাখ্যা আমলে নিয়েছে।
রাজস্ব বোর্ডের পাওনা বিষয়ে (যেটি মোট দাবিকৃত টাকার ৩২%) গ্রামীণফোন জানায়, রাজস্ব বোর্ডের হয়ে টাকা দাবি করার কোন এখতিয়ার বিটিআরসি’র নেই।
এমন পরিস্থিতিতে অডিটের দাবি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে বিটিআরসিকে একটি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আবারও আলোচনার দাবি জানায় গ্রামীণফোন।