চলছে ডিসেম্বর মাস। বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়ের মাস। দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভ করে। এই মাস জুড়েই চলে তাই বিজয়ের আনন্দের লাল সবুজ সমারোহ। জাতীয় পতাকার লাল সবুজ রঙে যেনো গোটা বাংলাদেশই সেজে ওঠে। প্রতিটি ডিসেম্বরই বাংলাদেশের লাল সবুজ আনন্দের পতাকায় ঝলমলে প্রতিদিন।
বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে চলছে পতাকার বেচা বিক্রি, জানালেন শাহবাগ মোড়ের পতাকা বিক্রেতা বাবু। তিনি এমনিতে সহকারি বাবুর্চি হিসাবে কাজ করেন জিঞ্জিরার এক হোটেলে। এই সপ্তাহে পতাকা বিক্রি করবেন। গতকাল তিনি বারোশ’ টাকার পতাকা বিক্রি করেছেন। এক সপ্তাহে সাত হাজার টাকা লাভ করতে চান।
খোকন, মুর্শেদ ও মালেক এর মতো আরো অনেকেই এই সপ্তাহে পতাকা বিক্রি করবেন। তাদের এই বাড়তি আয়ই তাদেরকে দেয় বিজয়ের স্বাদ।
র্মুশেদ জানান, পতাকা বিক্রি করে যে টাকা তিনি লাভ করবেন, তা দিয়ে কিনবেন একটা স্মার্ট ফোন। যা দিয়ে ফেসবুক চালাতে পারবেন এবং সেলফি তুলতে পারবেন।
নওগাঁ থেকে আসা রিকশা চালক ফজলু কিনেছেন মানচিত্র খচিত দুইটি স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা। তিনি জানালেন, মানচিত্রওলা পতাকা তার ভালো লাগে। একটি পতাকা তিনি তার রিকশায় লাগাবেন। আর একটা পতাকা বাড়ি নিয়ে যাবেন, তার ছেলের জন্য। ছেলের নাম নাঈম। নাঈম সামনের বছর থেকে স্কুলে যাবে।
জাতীয় পতাকা কিনছেন অনেকেই। কেউ বিজয়ের দিনে বাড়িতে ওড়াবেন। কেউ শিশুদের জন্য ছোট্ট পতাকা কিনছেন। সুমন নামের একজন ক্রেতা ছবি তুলতে আপত্তি জানালেন। তিনি বললেন, পতাকা পড়ার ঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখবেন।
বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার বা সিএনজি অটোরিকশাতেও ছোট জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায়। যেন বিজয়ের উৎসব মানুষের মনে প্রাণে।
হাতিরঝিল এলাকায় পতাকা কিনলেন একজন। পতাকা কিনে মাথায় বেঁধে নিলেন।
পতাকা দেখিয়ে ‘স্বাধীনতা’ মানে কী জানতে চাইলে, হাসেন নিজাম ও মনির। শেষে বলেনে, ‘স্বাধীনতা হইলো যেমনে ইচ্ছা তেমনে চলতে পারা, ভালো মতোন বাইচ্চা থাকা’।
নিজাম ও মনিরের সাথে কথা বলতে বলতে দেখা যায়, জাতীয় পতাকা ঝুলিয়ে উড়ে যাচ্ছে হেলিকপ্টার।
বিজয়ের এই মাসের উদ্দীপনা বাংলাদেশের মানুষের মনে দেশপ্রেমের চেতনা যেনো বাড়িয়ে দেয় শতগুণ।