বিচার বিভাগকে বিক্ষুব্ধ না করতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, কিছু পত্রিকায় খবর এসেছে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের দ্বন্দ্ব। আপনার মন্ত্রণালয়কে বলে দেবেন, ‘জেনারেল ক্লজ অ্যাক্টের টুয়েন্টিওয়ান’ পড়তে। আমি বলতে চাই, বিচার বিভাগকে বিক্ষুব্ধ করবেন না।
‘আইন না জেনে তারা একের পর এক ব্যবধান তৈরি করছে। মনে রাখবেন, সংবিধান অনুযায়ী আইনী ব্যাখ্যা দেওয়ার অধিকার কেবল সুপ্রিম কোর্টের।’
প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, স্বাধীনতার পর অনেক বছর পেরিয়ে গেছে। আমাদের অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে, কিছু অনিয়ম রয়েছে কিন্তু এগুলো নিয়ে সারাজীবন নয়। একটা সিস্টেমে চলে আসতে হবে।
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশে দুই সপ্তাহ সময় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।
আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি খসড়া বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়। কিন্তু গত বছরের ২৮ আগস্ট আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।
এরপর সুপ্রিমকোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইনমন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে ৬ নভেম্বর ২০১৬ এর মধ্যে খসড়া বিধিমালা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানাতে আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়।কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে খসড়া বিধিমালা প্রকাশে জন্য বার বার সময় নেয়া হয়।
সর্বশেষ গত ১৫ মে অ্যাটর্নি জেনারেলের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ খসড়া বিধিমালা প্রকাশের জন্য দুই সপ্তাহ সময় দেন।