চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘বাসযোগ্য’ ভিনগ্রহে মিলল পানি

প্রথমবারের মতো সৌরজগত থেকে দূরবর্তী একটি সম্ভাব্য বাসযোগ্য গ্রহে পানির সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

কে২-১৮বি নামের গ্রহটিতে পানির সন্ধান পাওয়ার পর এটিকে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজার জন্য আপাতত সবচেয়ে উপযুক্ত গ্রহ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে পানির অস্তিত্ব পাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। তবে এবারই প্রথম বাসযোগ্য হতে পারে, এমন কোনো গ্রহে পাওয়া গেলো পানির অস্তিত্ব।

বিসিসি জানায়, এই গ্রহটি একটি দূরবর্তী নক্ষত্রের ‘সম্ভাব্য বাসযোগ্য অঞ্চলে’র ভেতর কক্ষপথে রয়েছে। এ পর্যন্ত যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, মনে করা হচ্ছে কে২-১৮বি’র বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পানি দিয়ে গঠিত।

কে২-১৮বি গ্রহটিতে পানি আবিষ্কারের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল নেচার অ্যাস্ট্রনমি।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে তৈরি নতুন মহাকাশ টেলিস্কোপ দিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে এমন কোনো গ্যাসের উপস্থিতি আছে কিনা যা কেবল কোনো জীবের পক্ষেই উৎপাদন করা সম্ভব। সেটি নির্দেশ করবে, গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে।

একটি নক্ষত্রের আকার, নির্গত তাপ, তেজষ্ক্রিয়তা ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে সেটির চারপাশে একটি নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করা হয়ে থাকে, যেখানে কোনো গ্রহ থাকলে তাতে প্রাণের সঞ্চার হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। একে বলা হয় ‘সম্ভাব্য বাসযোগ্য অঞ্চল’।

পৃথিবী সূর্যের সঙ্গে যেমন দূরত্ব রেখে এর চারপাশে ঘুরছে, ওই গ্রহ এবং তার নক্ষত্রের মধ্যকার তুলনামূলক দূরত্বও তেমন। ফলে পৃথিবীতে যেমন প্রাণের উদ্ভব ঘটেছে, কে২-১৮বি’তেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকার বাস্তব পরিবেশ রয়েছে।

এই গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের অধ্যাপক জিওভানা টিনেট্টি।

তিনি এই আবিষ্কারকে ‘অভূতপূর্ব’ হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, সেখানকার তাপমাত্রা সম্ভাব্য প্রাণের অস্তিত্বের জন্য অনুকূল।

কে২-১৮বি পৃথিবী থেকে ১১১ আলোকবর্ষ, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৬শ’ মিলিয়ন মাইল দূরে। ফলে পানির সন্ধান পেলেও এত দূরে এখনো কিছুই পাঠানো সম্ভব নয়।

তবে আশা করা হচ্ছে ২০২০ সালের পর নতুন প্রজন্মের মহাকাশ টেলিস্কোপ চালু হলে সেগুলো দিয়ে গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান করার সুযোগ পাওয়া যাবে।