মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প, নির্বাচনে রুশ জালিয়াতিসহ নানা বিষয়ে বিস্ফোরক তথ্যে পূর্ণ একটি বই ‘ফায়ার এন্ড ফিউরি : ইনসাইড দি ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ’।
বইটির লেখক সাংবাদিক মাইকেল উলফের কাছে ‘মুখ খোলায়’ স্টিভ ব্যাননকে আইনজীবীর মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্যাননের বিরুদ্ধে গোপনীয়তার শর্ত লঙ্ঘন আর মানহানির অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্টের আইনজীবীদের বক্তব্য, চাকরি ছাড়ার পরে গোপনীয়তা রক্ষার যাবতীয় শর্ত ভেঙ্গেছেন ব্যানন। তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।
নিজের সাবেক মুখ্য পরামর্শদাতা স্টিভ ব্যাননকে গত আগস্ট মাসে বরখাস্ত করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ে লেখা বইটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের আইনজীবীরা বইটির প্রকাশনা বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। আর এই ঝামেলা এড়াতে বইটি আগেই বাজারে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। মঙ্গলবার বইটি প্রকাশ হওয়ার কথা।
নির্বাচনে জয়ের পর দ্বিধায় বা সংশয়ে পড়ে গিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, অভিষেকের দিনটিও তার ভালো লাগেনি, হোয়াইট হাউজ নিয়ে তার ভীতি ছিল, রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়য়ের বৈঠক, ইভাঙ্কার রাষ্ট্রপতি হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা- এমন সব তথ্য রয়েছে আগামী সপ্তাহে প্রকাশিতব্য বইটিতে।
দুইশোর বেশি সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে বইটি লিখেছেন সাংবাদিক মাইকেল উলফ। তিনি জানিয়েছেন, অভিষেকের দিন থেকে শুরু করে ট্রাম্পের প্রশাসন গভীরভাবে দেখার সুযোগ তিনি পেয়েছেন।
বইয়ে ব্যাননের যাবতীয় বিতর্কিত মন্তব্য সম্প্রতি ফাঁস করে দিয়েছে একটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম। যা ইতিমধ্যে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।
হোয়াইট হাউজের গণমাধ্যম সচিব সারাহ স্যান্ডার্স বলছেন, বইটি অসত্য আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য দিয়ে ভরা। বইটিকে একটি সস্তামানের ট্যাবলয়েড বলেও অভিহিত করেন তিনি।
বইটির তথ্য অনুসারে, স্টিভ ব্যানন বলেছেন, ২০১৬ সালের জুনে রাশিয়ার কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে ট্রাম্প টাওয়ারে একটি বৈঠক করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র। সেখানে কোন আইনজীবীকে রাখা হয়নি। ওই বৈঠকে রাশিয়ানরা ট্রাম্প জুনিয়রকে হিলারি ক্লিনটনের বিষয়ে কিছু নেতিবাচক তথ্য তুলে দেন।
পুরো ঘটনাটি রাষ্ট্রদ্রোহের মতো বলে মনে করেন ব্যানন। তিনি মন্তব্য করেছেন, আমাদের সে সময়েই এফবিআইকে ডাকা উচিত ছিল।
এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, ব্যাননের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যখন তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তখন তার মাথাও খারাপ হয়ে গেছে।
শুধু ট্রাম্প জুনিয়রই নন, মেলানিয়া থেকে শুরু করে ইভাঙ্কা ট্রাম্প, বইয়ে পরিবারের একের পর এক সদস্যকে নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন ব্যানন।
যদিও এক রেডিও অনুষ্ঠানে কাল ব্যানন বলেছেন, “দেশের প্রেসিডেন্ট এক জন দারুণ মানুষ। আমি সব সময় তাকেই সমর্থন করি।” যা প্রতিক্রিয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‘ব্যানন দেখছি খুব সহজেই সুর পাল্টে ফেলেন।’’