চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বাবা-মা হারা পরীমনি যেন ন্যায়বিচার পায়: কোনাল

পরীমনি ইস্যুতে দেশের জনপ্রিয় কয়েকজন তারকা মুখ খুলেছেন। তাদের কথা, পরীমনির বিচার যেন ভিন্ন দিকে না গিয়ে সঠিক হয়। প্রত্যেকেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শিল্পী হয়ে পরীর প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছেন।

চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠের শিল্পী কোনালও তার মত প্রকাশ করলেন। ফেসবুক স্ট্যাট্যাস দিয়ে তিনি বললেন, বাবা-মা হারা পরী যেন ন্যায়বিচার পায়

শনিবার ফেসবুকে পোস্টে কোনাল গভীর ব্যাখ্যা দিলেন। যেখান শিল্পীর সম্মান উঠে এসেছে। গেল বছর সুশান্ত সিং রাজপুত্রের মৃত্যু ঘিরে বলিউডে যে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সেই প্রসঙ্গ তুলে কোনাল বলেন, ‘‘খবর পড়ছিলাম বসে বসে। হঠাৎ মনে পড়ে গেলে গত বছরের সেই ঘটনার কথা।

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুকে ঘিরে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) যখন মাদক মামলায় দীপিকা পাড়ুকোনকে তলব করলেন (বলা হয় মাদক সংশ্লিষ্ট একটি হোয়াটস্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন দীপিকা) দীপিকা তখন ছিলেন মুম্বাইয়ের বাইরে, শুটিংয়ে ব্যস্ত।

তিনি পরদিন চার্টার্ড বিমানে করে ফিরলেন মুম্বাই (তাকে সম্মান সূচক সেই সময় এবং স্পেস দেয়া হয়েছিল এবং সেই সময়টুকু দীপিকা কাজে লাগিয়েছিলেন তার আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করতে)। পুলিশের মনে হলো এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দীপিকার বাসায় এবং থানার সামনে হতে পারে হট্টগোল। দীপিকাকে হেয় করতে পারে জনগণ। তার সম্মানহানি হতে পারে, পড়তে হতে পারে বাড়তি ঝামেলায়। তাই তখন মুম্বাইয়ের দাদার পুলিশ স্টেশন থেকে একটা টিম মোতায়েন করা হলো দীপিকার বাড়ির সামনে। তাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং সম্মান দিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো।’’

কোনাল আরও লিখেছেন, ‘‘দীপিকা ওই মামলার সঙ্গে আদৌ জড়িত কি না, বা কতটুকু জড়িত, তা জানবার আগ পর্যন্ত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং সম্মান তাকে দেয়া হয়েছিল। এটা একজন সাধারণ নাগরিকেরই প্রাপ্য; সেখানে দীপিকা তাদের দেশের সম্পদ!’’

এ প্রসঙ্গে কোনাল তার পোস্টে পরীমনিকে উল্লেখ করে মনে উঁকি দেওয়া কয়েকটি প্রশ্ন রেখছেন।

সেসব প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি পরীমনিকে ডাকত, সে কি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যেতো না থানায়? পরীমনির ১০৫ বছরের বৃদ্ধ নানা আদালত প্রাঙ্গনে ছুটে গিয়েছিলেন এই কঠিন সময়েও! অথচ তাকে দেখা করতেই দেয়া হয়নি পরীর সাথে। টেনে হেঁচড়ে পরীকে জাকড়ে ধরে নেয়া হচ্ছে, আনা হচ্ছে, যেন তিনি দেশ ও জাতির বিশাল কোনো ক্ষতি করে ফেলেছেন!

পরীর পার্সোনাল ভিডিও জনসমুক্ষে এসেছে কীভাবে? যে ইউটিউব চ্যানেল থেকে এই ভিডিও প্রকাশ করা হলো সেই চ্যানেল মালিক কি করে পেলো এই ভিডিও? তার মানে শুধু এই ভিডিও নয়, আরো কিছু পৌঁছেছে তার কাছে! উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই ঘৃণিত কাজ কারা করছে? জানতে পারব কি কোনোদিন?’’

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কড়া সমালোচনা করে ব্যক্তিগত উদাহরণ দিয়ে কোনাল লিখেছেন, ‘‘আমার পরিবার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক পরিবার। জন্মের পর থেকেই দেখছি সংগঠন বা সমিতি, কীভাবে তাদের সদস্যদের পাশে দাঁড়ায়, সদস্যদের জন্য সংঘবদ্ধ থাকেন। অথচ চলচ্চিত্রের সেই সমিতি পরীর সদস্যপদই সাময়িক স্থগিত করে দিলে। তা হয়তো তাদের সংবিধান অনুযায়ী যা আছে করুক। কিন্তু তাদের সংবিধানে কি নেই যে, একজন শিল্পীর মন্দ যেমন দেখব ভালোটাও দেখতে হবে? পরীর কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা, ওর সঙ্গে কোনো অবিচার হচ্ছে কিনা, পরী ঠিক মতো আইনের সহযোগিতা পাচ্ছে কিনা, এটা দেখাও কি সমিতি বা সংগঠনের বিধানে নেই? তাহলে কেন এবং কাদের স্বার্থে এই সমিতি/সংগঠন?

তালি এক হাতেই বেজেছে এতদিন? তবে তো সেটা বিশ্ব রেকর্ড! পরীর দিকে আঙ্গুল উঁচানো এতো এতো খারাপ কাজ, সেগুলো সে একা করেছে? একা করলে তো আর কথাই নেই। নিজের ক্ষতি নিজে করছে, অন্যকে অসুবিধা করেনি। কিন্তু তালি তো আসলে এক হাতে বাজে না। সেই তালির আরেক হাত কোথায়? তালির এই হাতগুলো কারা! কেন তাদের নাম গোপন রাখা হচ্ছে? মান-সম্মানের স্বার্থে? তাহলে পরীর যে মান-সম্মান বিকি কিনি হয়ে গেলো, সেটার কি হবে? প্রশ্নগুলো রয়ে গেল…. উত্তর???’’

সবশেষে কোনাল অনুরোধ জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘আমি এ দেশের একজন ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র শিল্পী হয়ে পরীর সহকর্মী হয়ে, একজন নারী হয়ে, দেশের একজন সচেতন নাগরিক হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাতে চাই বাবা-মা হারা পরীমনি যেন ন্যায় বিচার পায়। তাকে আলাদা করে সহযোগিতা করতে হবে না। তার প্রাপ্যটুকু যেন নিরপেক্ষভাবে তাকে দেওয়া হয়। আমার দেশের বিচার বিভাগের উপর আমি আশাবাদী। এটুকু হতেই চাই। এটুকু হতেই হবে!’’