বাজেট স্বচ্ছতা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের পাশাপশি প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়েও এগিয়ে। বাংলাদেশের তুলনায় একধাপ পিছিয়ে রয়েছে ভারত।
বিশ্বে অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান মধ্যবর্তী পর্যায়ে। প্রতিবেদনটিতে ২০১৩-১৪ সালের অর্থবছর বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
সমীক্ষা প্রতিবেদনটিতে যেখানে বাংলাদেশের প্রাপ্ত স্কোর ১০০ এর মধ্যে ৫৬ সেখানে ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে ভারতের প্রাপ্ত স্কোর ৪৬। ভারতের এই স্কোর সমীক্ষায় অংশ নেওয়া অন্যান্য দেশগুলোর গড় স্কোর ৪৫ এর চেয়ে এক পয়েন্ট বেশি।
এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের স্কোর ১০০ এর ভেতর ৪৩, আফগানিস্তানের ৪২, শ্রীলংকার ৩৯ এবং নেপালের স্কোর ২৪।
আন্তর্জাতিক বাজেট অংশিদারীত্বের উদ্যোগে ‘ওপেন বাজেট সার্ভে ২০১৫’ নামক প্রতিবেদনটিতে দেশগুলোর বাজেটের স্বচ্ছতা যাচাইয়ে তিনটি প্রধান বিষয়কে প্রধান করে অন্যান্য কয়েকটি বিষয়কে মূল্যায়ন করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে জনগণের অংশগ্রহণ, আইন বিভাগের তত্ত্বাবধায়ন এবং নিরীক্ষণ ব্যবস্থাপনা।
জনগণের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল বর্ণনা করা হয়েছে। বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ এর মধ্যে ২৩। আইন বিভাগের তত্ত্বাবধায়নে স্কোর ১০০ এর মধ্যে ৪৯। যাকে সীমিত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং নিরীক্ষণ ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ভালো করা বাংলাদেশের স্কোর ১০০ এর মধ্যে ৭৫।
নিরীক্ষণের ব্যবস্থাপনা বিষয়টিতে ভারতের ফলাফল প্রশংসনীয়, ১০০ এর মধ্যে তার স্কোর ৭৫। কিন্তু অন্য দুই বিষয়ে ভারতের অবস্থান দুর্বল। বিশেষত জনগণের অংশগ্রণের ক্ষেত্রে ১০০ এর মধ্যে ভারতের স্কোর মাত্র ১৯।
এক্ষেত্রে ৮৮ স্কোর করে শীর্ষস্থান দখল করেছে নিউজিল্যান্ড। সুইডেন, সাউথ আফ্রিকা, নরওয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্র এই চারটি দেশের স্কোরই ৮০ এর মধ্যে রয়েছে। ব্রিকস জাতি গুলোর মধ্যে ব্রাজিল ৭৭, রাশিয়া ৭৩ এবং চীনের স্কোর সর্বনিম্ন ১৪।
চীনের এই স্কোর বাজেট প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে কম স্বচ্ছতা অবলম্বন করে।
২০১২ সালে করা একই সমীক্ষায় ভারতের করা স্কোর ৬২ এর তুলনায় এবার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এই নিম্নমুখি প্রবণতার জন্য কিছু সাময়িক কারণ যেমন অর্ধ-বছরের রিভিও এবং বছর শেষের প্রতিবেদন ঠিক সময়ে উপস্থাপন না করা অনেকাংশে দায়ী।
এই সমীক্ষার কাজটি বিশ্ব জুড়ে কাজ করা ১০২টি রিসার্চ এবং সিভিল সোসাইটি সংস্থার দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে। ভারতের জন্য এই গবেষণার কাজটি করেছে ভারতের বাজেট তৈরির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার বিষয়ে সহায়তা করা বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর বাজেট এন্ড গভার্নেন্স একাউন্টিবিলিটি (সিবিজিএ)।