চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বাজেট দেশীয় ঋণের উপর নির্ভরশীলতা বাড়াবে: সিপিডি

প্রস্তাবিত বাজেট উচ্চাভিলাষী নয় তবে বাজেট বাস্তবায়নের দেশীয় ঋনের উপর নির্ভরতা এর সাফল্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ(সিপিডি)। সিপিডি বলছে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো ধরণের মন্দা না থাকা সত্ত্বেও দেশের অর্থায়নে রাজস্বের পরিমান কমেছে এবং অভ্যন্তরীন ঋনের পরিমান বেড়েছে। এটা কোনোভাবেই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আশাব্যঞ্জক নয়।

জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবের পরদিন তার মূল্যায়ন করে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিপিডি। গত ১০ বছর ধরেই তারা এটা করে আসছে। এবারের মূল্যায়ন তুলে ধরেন সংস্থাটির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, দেশে উন্নয়নের চেয়ে অনুন্নয়ন ব্যয় বেশি।এবারে বাজেটে যে ঘাটতি ধরা হয়েছে তা মোট জাতীয় উৎপাদনের পাঁচ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণ করতে সরকারকে বিদেশ থেকে ঋন আনতে হবে ৪.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যেটা এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনও সম্ভব হয়নি।

ফলে এই বৈদেশিক ঋন অর্জন সম্ভব না হলে সরকারকে অভ্যন্তরীন উৎস থেকে ঋনের ব্যবস্থা করতে হবে। যা সামগ্রিকভাবে দেশের বিনিয়োগকে প্রভাবিত করবে। এসব ঋনের সুদ পরিশোধ করতে সরকারকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। ফলে উন্নয়নের জন্য সরকার যে উদ্বৃত্ত ব্যয় করবে তা সম্ভব হয় না। ফলে বিষয়টা শেষ পর্যন্ত এমন হয়ে যায় যে লাভের গুড় পিঁপড়ায় খেয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এখনও দেশের ঋনের পরিমাণ জিডিপির ৩৫ শতাংশ। যার মধ্যে ২০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ এবং বাকি ১৫ শতাংশ বৈদেশিক ঋন।

এক্ষেত্রে সিপিডির পরামর্শ, পাইপলাইনে আটকে থাকা বৈদেশিক সহায়তাগুলো দ্রুত দেশে এনে কাজে লাগাতে হবে এবং সেই সঙ্গে আর্থিক খাতে দরকার পরিপূরক সংস্কার এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ঐক্যমত্য।

সিপিডির ভাষ্য, বাংলাদেশে প্রতিবছর বাজেট প্রস্তাব দেয়া হয় সংশোধীত বাজেটের ভিত্তিতে, অর্জনের ভিত্তিতে নয়। তাদের পরামর্শ প্রতি বছর কোন, কোন খাতে কী পরিমান অর্জন হলো না হলো তার ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।

এবছর জেলা বাজেট তুলে দেয়ায় আশাহত হয়েছে সিপিডি। এ নিয়ে তাদের ভাষ্য, কেনোই বা এই জেলা বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছিলো আর এ খাতে কত ব্যয় হলো এবং লক্ষ্যই বা কতটুকু অর্জিত হলো তা না জানিয়ে হঠাৎ করে জেলা বাজেট বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের মতে এই বাজেটের সবচাইতে অন্ধকারাচ্ছন্ন দিক এটি। তারা মনে করে জেলা বাজেট থাকাটা আঞ্চলিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কৃষি এবং স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দ কমে যাওয়ায় উদ্বেগ জানালেও এবারের বাজেটে শিশু বাজেট নিয়ে ছোট্ট যে আলাদা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি। তাদের মতে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।

সিপিডি আশাবাদী অর্থমন্ত্রীর প্রত্যশার তিনবছর আগেই বাংলাদেশ নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তর হবে। তবে গাঁ থেকে স্বল্পোন্নত দেশের গন্ধ কাটাতে আরো ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে।