ব্রিটেন থেকে সিরিয়ায় গিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে কাজ করা শামীমা যে বাংলাদেশে আশ্রয় পাবেন না, সরকারের তরফে সেটা আগেই বলা হয়েছে। এখন নতুন করে বিষয়টা আলোচনায় এসেছে, ব্রিটেনের আদালতে প্রত্যাখ্যাত হয়ে শামীমার আইনজীবীদের বাংলাদেশে যোগাযোগের পর।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের আদালত সম্প্রতি শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের পক্ষে রায় দেন। শামীমার আইনজীবীদের হাতে আর একটি আপিলের সুযোগ থাকলেও তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে এখনও পর্যন্ত তাকে নাগরিকত্ব না দেওয়া ও প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে রয়েছে সরকার।
আইএস জঙ্গি শামীমার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ কোনো জঙ্গির আশ্রয়স্থল হতে পারে না বলেই আমরা মনে করি। এছাড়া শামীমা বাংলাদেশি নাগরিকও নন। ব্রিটিশ নাগরিক। সিরিয়ায় গিয়েছেন যুক্তরাজ্য থেকে, বাংলাদেশ থেকে নয়। এক্ষেত্রে শামীমার বিষয়ে বাংলাদেশের কোনো দায় নেই বলেই আমরা মনে করি।
সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এসডিএফ) পরিচালিত আল রোজ নামের একটি আশ্রয়শিবিরে থাকা শামীমা ২০১৫ সালে ১৫ বছর বয়সে দুই বান্ধবীসহ যুক্তরাজ্য ছেড়ে সিরিয়ায় গিয়ে ইসলামিক স্টেটে যোগ দেন। সিরিয়ায় অবস্থানের সময়ই তিনটি সন্তানের জন্ম দেন শামীমা। তিনজনই মারা যায়। এমন জঙ্গিকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি) এর পর্যালোচনার সঙ্গে একমত পোষণ করে আমরা বরাবরের মতো বলতে চাই, শামীমা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার জন্য চরম হুমকি। তাকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা থেকে বিরত রাখা অনিবার্য। শুধু শামীমা নন, জঙ্গিসংশ্লিষ্ট কাউকেই এ দেশে ঢুকতে দেওয়ার পক্ষপাতী নই আমরা।
এটা ঠিক যে, জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান ঠেকাতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই বিশ্বে রোলমডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হলি আর্টিজানের পর থেকে জঙ্গি দমনে কঠোর অবস্থান নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ। তবুও নতুন করে কোনো জঙ্গির ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হবে না। এজন্য যথাযথ কূটনৈতিক তৎপরতাসহ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।