প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে বিশ্বে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, শিক্ষার হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধি এবং দারিদ্র বিমোচনে বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে এক অনন্য উদাহরণ।’
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের এক তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের নগর উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ সমাজের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এবং প্রতিটি গ্রামে নগর সুুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমাদের সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
বিগত এক দশকে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে গ্রামীণ জনগণের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ায় শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমে এসেছে।’
জাতির পিতা প্রথম গ্রামীণ উন্নয়নের মাধ্যমে শহর ও গ্রামের পার্থক্য ঘুচিয়ে আনার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তারই পদাংক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮তে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ-এ প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার করেছি।’
সরকার শহর ও গ্রামের পার্থক্য ঘুচিয়ে আনার যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার মধ্যে রয়েছে, সকলের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সারাদেশে ১ হাজার ৪৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন এবং ৩৯ হাজার ৩টি অতিরক্তি শ্রেনীকক্ষ এবং ৩৯৫টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ। একই সঙ্গে ৭ হাজার ৭৪২টি বিদ্যালয় পুন:স্থাপন, ২৮ হাজার ৫শ’টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ৩৯ হাজার ৩শ’ নলকূপ স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ৫০ হাজার ৪৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আধুনিক শিক্ষার সরঞ্জামাদি প্রদান করে মাল্টিমিডিয়া শ্রেনীকক্ষ চালু করা হয়েছে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি এবং উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝরে পড়া রোধকল্পে ১২১টি উপজেলায় ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে ৭ হাজার ৪৫৬টি শিক্ষা কেন্দ্রে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮২ জন শিক্ষার্থীর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তার সরকার কারিগর শিক্ষার প্রসারে ১শ’টি উপজেলায় ১শ’ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং ৫ হাজার মাদ্রাসায় কারিগরি কোর্স চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে তার সরকার সারাদেশে ১৩ হাজার ৫শ’ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য বাতায়ন নামে ২৪ ঘণ্টা একটি হেলথ কল সেন্টার চালুসহ রোগ নির্ণয়ে উপজেলা পর্যায়ে এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি, সেমি অটো এনালাইজার, ইএনটি ওপিডি সেট সরবরাহ করা হয়েছে।
এসময় শেখ হাসিনা গ্রামীণ উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং সমবায় সৃষ্টি,কৃষি আধুনিকায়ন, যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়ন,বিদ্যুতায়ন, স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির কর্মসূচি, আমার বাড়ি আমার খামার এবং ভূমিহীনদের জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করণে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন।