চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিন কারা কখন কীভাবে পাবে?

এক বছরের বেশি সময় ধরে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় আক্রান্ত। দেশে মোট আক্রান্ত ৫ লাখ ২ হাজার ১৮৩ জন এবং মারা গেছেন ৫ হাজার ৫৭৫ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৭৩৭ জন নারী। তবে সুস্থ হবার হার বেশ সন্তোষজনক। সবমিলিয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৪ জন। তবে দেশে শীতকাল শুরু হবার ফলে বর্তমানে করোনার প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে।

এই অবস্থার মধ্যে সুখবর হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে করোনা ভ্যাকসিন অনুমোদনের পাশাপাশি ব্যবহার শুরু হয়েছে। ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের ব্যাপক প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনও প্রয়োগের পথে। এছাড়া রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ ও চীনের সিনোভ্যাকও প্রয়োগ হচ্ছে সেসব দেশে। সবমিলিয়ে বিশ্ববাসীর মনে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে। যদিও এরই মধ্যে (২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত) সারাবিশ্বে ১৭ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন পৌঁছাতে শুরু করলেও করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশ কবে আসবে আর কবে জনগণ পাবে? ভ্যাকসিন আসলেও কারা পাবে, কখন পাবে? এসব প্রশ্ন নিয়ে অপেক্ষায় পুরো দেশ।

কোন ভ্যাকসিন আসছে?

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আর স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, বহুল প্রতিক্ষিত করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসতে পারে নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে৷ এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে আসতে থাকবে ভ্যাকসিন। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমুনাইজেশন (গ্যাভি), কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপিয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তত্ত্বাবধায়নে কোভ্যাক্স নামে উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর জন্য ২০২১ সালের মধ্যে ২০০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ নিশ্চিত করতে জোটবদ্ধ হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশও সেই জোটের তালিকাভূক্ত দেশ। ১ দশমিক ৬ থেকে ২ দশমিক শূন্য ডলার পর্যন্ত খরচ করে কোভ্যাক্স থেকে করোনা ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ।

কোভ্যাক্সের বাইরেও সরকার সরাসরি ভ্যাকসিন কিনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ইতিমধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সরাসরি কেনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্থানীয় প্রস্তুতকারক হিসেবে নিযুক্ত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের সঙ্গে ক্রয় চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এই চুক্তিতে বাংলাদেশ ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাবে। এছাড়া রাশিয়ার গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের সঙ্গেও স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন পেতে আলোচনা চলছে। ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের জন্য বাংলাদেশ আগ্রহপত্র জমা দিয়েছে সেপ্টেম্বরে।

প্রথম দফায় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ভারত থেকে করোনাভাইরাসের ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আনার পর আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে কোভ্যাক্সের আওতায় আরও ছয় কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাওয়ার অগ্রগতির এসব তথ্য তুলে ধরেন।

কীভাবে প্রয়োগ?

ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে তা দেশের মানুষের উপরে প্রয়োগের বিষয়টি সামনে চলে আসে। কোটি কোটি মানুষের মাঝে কীভাবে সেই ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়া হবে? তা নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা চলমান। তবে আশার কথা হচ্ছে কয়েকযুগ ধরে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে নানা ধরণের ভ্যাকসিন/টিকা দেবার সফল অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা পুরো বিশ্বের জন্য একটি মডেল স্বরুপ। কাজেই প্রয়োগের বিষয়টি নিয়ে খুব একটা বেগ পেতে হবে বলে মনে হয় না। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় পর্যায়ে তিনটি কমিটি গঠিত হয়েছে। জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিতরণ ও প্রস্তুতি পরিকল্পনার প্রাথমিক খসড়া ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

কারা আগে পাবে?

স্বাস্থ্য বিভাগের যে খসড়া পরিকল্পনা ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সে অনুসারে মোট চারটি পর্যায়ে বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। বাকি ২০ শতাংশকে হার্ড ইমিউনিটির কারণে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ভ্যাকসিন বিতরণের প্রক্রিয়াটি মোট চারটি পর্যায় বা ধাপে বিভক্ত। স্বাস্থ্য বিভাগের এমআইএস ইউনিট সূত্রে এসব জানা গেছে।

পর্যায়-১ (এ) ধাপে প্রায় ৫২ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রায় ৩ লাখ, সব বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের (এনজিওসহ) সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রায় ৬ লাখ এবং সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ও কর্মী (স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও প্রশাসনিক কর্মীসহ) প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার জন। এরপরে ভ্যাকসিন পাবেন ২ লাখ ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের পরে গুরুত্বপূর্ণ সব সম্মুখসারির কর্মী যারা সরাসরি জনসংষ্পর্শে থেকে দায়িত্ব পালন করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সামরিক, আধা-সামরিক ও প্রতিরক্ষা বাহিনী সব মিলিয়ে প্রায় ৯ লাখের বেশি জন।

এরপরে অগ্রগণ্য তালিকায় আছেন প্রজাতন্ত্রের ৫ হাজার গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা (মন্ত্রণালয়, সচিবালয়, জেলা প্রশাসক, ইউএনও)। পাবেন ৫০ হাজার সম্মুখসারির সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী। তালিকায় এরপরে আছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি (সাংসদ, মেয়র, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, কাউন্সিলর ইত্যাদি) এবং এরপরই আছেন সিটি করপোরেশনের প্রায় দেড় লাখ কর্মী, যাঁরা সরাসরি মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

পরের তালিকায় আছেন ৫ লাখ ৮৬ হাজার ধর্মীয় পেশাজীবী (ইমাম, মুয়াজ্জিন, চার্চ, মন্দির, বৌদ্ধমন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়ের ধর্মীয় পেশাজীবী)। এরপর ৭৫ হাজার দাফন ও সৎকারে যুক্ত কর্মী; গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, পয়োনিষ্কাশন, ফায়ার সার্ভিস ও পরিবহনব্যবস্থায় জড়িত কর্মী প্রায় ৪ লাখ। এরপর আছেন প্রায় দেড় লাখ বন্দরকর্মী, ১ লাখ ২০ হাজার প্রবাসী শ্রমিক, যারা কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশে ফিরে যাবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরাসরি মানুষের সংস্পর্শে এসে কাজ করতে হয়, এমন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা (৪ লাখ) এবং ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন ব্যাংক কর্মী। এ ছাড়া এই তালিকায় আরও আছেন ৬ লাখ ২৫ হাজার, যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম বা ইমিউনোকম্প্রোমাইজড রোগী যারা বিশেষ ঝুঁকিসম্পন্ন। এ ছাড়া রিজার্ভ হিসেবে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য জমা রাখা হবে প্রায় ৭৮ হাজার ভ্যাকসিন।

পর্যায়-১ (বি) ধাপে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। এ পর্যায়ে অগ্রগণ্য হবেন ৬০ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীরা। এই বয়সীদের করোনাজনিত মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি।

পর্যায়-২ ধাপে ১ কোটি ৭২ লাখ মানুষকে (জনসংখ্যার ১১-২০ শতাংশ) ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত হবেন ৫৫ বছর বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তি, যাঁরা আগের ধাপগুলোতে ভ্যাকসিন পাননি (৫৫,৬৬,৭৫৭ জন), বয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ রোগে আক্রান্ত আরও ৩০ লাখ ২১ হাজার ৯৩৬ জন, সংক্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারী (১৭,৮৮,০৫৩ জন), পূর্ববর্তী ধাপে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মী (৫০,০০০ জন), দুর্গম অঞ্চলগুলোর বাসিন্দা (১০,১১,২২৮ জন), ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী (১২ লাখ), গণপরিবহন কর্মী (৫ লাখ), হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ফার্মেসিতে কর্মরত ব্যক্তি (২,৪২,৯৬৪) এবং ৩৬ লাখ পোশাককর্মী। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত থাকবে ৩ লাখ ভ্যাকসিন।করোনাভাইরাস

পর্যায়-৩ ধাপে আরও প্রায় ৩ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ (জনসংখ্যার ২১-৪০ শতাংশ) ভ্যাকসিন পাবে। এই ধাপে অগ্রগণ্য হবেন শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, যারা আগের ধাপে ভ্যাকসিন পাননি (৬,৬৭,২০৪ জন), অন্তঃসত্ত্বা নারী (যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরাপদ ঘোষিত হয়), অন্যান্য সরকারি কর্মচারী, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, অন্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মী, অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী, রপ্তানি ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মী, কয়েদি ও জেলকর্মী, শহরের বস্তিবাসী বা ভাসমান জনগোষ্ঠী, কৃষি ও খাদ্য সরবরাহের কাজে নিয়োজিত কর্মী, বিভিন্ন ডরমিটরি নিবাসী, গৃহহীন জনগোষ্ঠী, অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মী; অন্যান্য গণপরিবহনের কর্মী, যারা আগের ধাপে অন্তর্ভুক্ত হননি, ৫০-৫৪ বছর বয়সী ব্যক্তি, যারা আগের ধাপে অন্তর্ভুক্ত হননি।

পর্যায়-৪ ধাপে চতুর্থ ও শেষ পর্যায়ে জনসংখ্যার বাকি ৪১-৮০ শতাংশকে অন্তর্ভুক্ত করতে আরও ৬ কোটি ৯১ লাখ ২৩ হাজার ৭৫৪ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এ ধাপে শিশু, কিশোর, স্কুলগামী ছাত্রছাত্রী ও অন্যদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে।

কীভাবে হবে অগ্রগণ্য তালিকা, কোথায় প্রয়োগ?

উপরে ভ্যাকসিন পাবার জন্য যে অগ্রগণ্যদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার তালিকা কীভাবে হবে? তা নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, ওই অগ্রগণ্য তৈরি করবে জেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা কোভিড-১৯ সমন্বয় কমিটি। উল্লেখিত নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর স্বেচ্ছা নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মবিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্টের মাধ্যমে একটি ইলেকট্রনিক সিস্টেমে তালিকা হবে। ইতিমধ্যে এ লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন চলছে।

ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা হবে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অর্থাৎ সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন কার্যালয়ে, যেমন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার, ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় ইত্যাদির মাধ্যমে। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে। পুরো বিষয় তদারক করার সুবিধার্থে একটি মোবাইল বা ওয়েবভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ডেটাবেইজের সঙ্গে সমন্বিত থাকবে।

সরকারি বিভিন্ন পরিকল্পনা আর বাস্তবতার বাইরেও ভ্যাকসিন ইস্যুতে নানা বিষয় হাজির হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। কারণ এই ভ্যাকসিন নিয়ে দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে নানা উৎকণ্ঠার পাশাপাশি পাওয়া-না পাওয়ার আগাম হতাশাও রয়েছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সাম্প্রতিক সময়ে খেয়াল রাখা দরকার, তা হলো করোনা ভ্যাকসিনের মজুতকরণ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা। ঠিক কোন তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন মজুত করতে হবে, তা ভ্যাকসিন ভেদে আলাদা। কাজেই সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে সেই মজুত প্রস্তুতি আগে থেকেই নেয়া উচিত। সব মানুষই বাঁচার তাগিদে আগে ভ্যাকসিন পেতে চাইবে, আর এই প্রেক্ষাপটে ভ্যাকসিন লুট বা ডাকাতি হতে পারে বলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল) সতর্ক করে দিয়েছে। দেশে এরআগে প্রাপ্তির অনিশ্চয়তায় ত্রাণ লুটের ঘটনা ঘটেছে, ভ্যাকসিন যেনো লুট বা ডাকাতি না হয়। দেশের প্রান্তিক মানুষ যেনো দামের কারণে বা অব্যবস্থার কারণে ভ্যাকসিন অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তাহলেই হয়তো দ্রুত পুরোদেশ করোনার ঝুঁকি মুক্ত হবে।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)