চট্টগ্রাম থেকে: দেবজিত মজুমদার। কলকাতা জায়ান্ট মোহনবাগান ক্লাবের মূল একাদশে জায়গা পাওয়া হাতেগোনা কয়েক বাঙালির একজন। পজিশন গোলরক্ষক। ভক্তরা তাকে ভালোবেসে নাম দিয়েছে ‘সেভজিত’! দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে আসা। জানিয়ে দিলেন এ যেন তার শহরেরই মতো। চেনা পরিবেশ। এর মাঝেও খানিকটা আফসোস, এখন পর্যন্ত ইলিশটাই যে পাতে উঠেনি তার!
২০১৭ সালে প্রথমবার বাংলাদেশে আসা দেবজিতের। সেবার এসেছিলেন ঢাকায়। আবাহনীর বিপক্ষে এএফসি কাপে ম্যাচ খেলতে। মাত্র একদিন থেকেছিলেন। তাই বাংলাদেশকে খুব একটা দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
এবার বাংলাদেশে এসেছেন শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে খেলতে। মোটামুটি একটা লম্বা সময় ধরেই চট্টগ্রামে থাকায় আশপাশটা দেখার সুযোগ হয়েছে। দুই রাত আগে পুরো মোহনবাগান দল ঘুরে এসেছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে। দেখেশুনে দেবজিতের মত, ‘এখানে এসে ভালোই লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা এখানে ভাষাগত সমস্যা নেই। আমরা সাধারণভাবে যে ভাষায় কথা বলি, এখানেও সে ভাষায় কথা বলা হয়। তাই ভালোই লাগছে।’
কিছুদিন আগে দুর্গাপূজার সময় ট্রাক ভরে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এবার দেবজিত তো এসে পড়েছেন খোদ বাংলাদেশেই। তো কেমন খাওয়া হল ইলিশ? দেবজিতের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘ইলিশ খাওয়া হয়নি!’
ইলিশের মতো আরেকটা আফসোস থাকলেও থাকতে পারে দেবজিতের মনে, ভারতীয় ফুটবলে ক্রমেই কমছে বাঙালি ফুটবলার। মোহনবাগানের যে দলটা খেলতে এসেছে চট্টগ্রামে, তাতে তিন গোলরক্ষকই বাঙালি। ডিফেন্ডার অরিজিত বাগুই, মিডফিল্ডার সোহরাবউদ্দিন মল্লিকরাও বাঙালি। তবে মূল একাদশে বিদেশিদেরই দাপট। উত্তর ভারত থেকেও ফুটবলার আসছে দেদার। কলকাতাবাসীর প্রাণের ক্লাবে বলতে গেলে বাঙালি ফুটবলারদের এখন দেখা মেলে কদাচিৎ।
খানিকটা আফসোস থাকলেও সত্যিটা উপলব্ধি করছেন দেবজিত। তার মতে ভালো খেললে তবেই না জায়গা মিলবে একাদশে, ‘আমাদের দলে বাঙালি ফুটবলার আছে, তবে কম। তবে এটা ব্যাপার না। যে ভালো খেলবে, যারা ভালো খেলছে, তারাই সুযোগ পাবে। আগে অনেক বাঙালি ফুটবলার ছিল। সামনে হয়তো আবারও বাড়বে। তবে দিনশেষে যারাই ভালো খেলবে তারাই না সুযোগ পাবে।’
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মঙ্গলবার মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়ার ক্লাব তেরেঙ্গানু এফসি। গতিময় তেরেঙ্গানুর ফরোয়ার্ডরাই তাদের সর্বনাশ করতে পারে বলে মত দেবজিতের। গ্রুপপর্বে সবচেয়ে বেশি ৯ গোল করা প্রতিপক্ষের আক্রমণ জোয়ার ঠেকানোই তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, ‘ওদের ফরোয়ার্ডরা খুবই দ্রুত ফুটবল খেলে। তবে আমরাও ভালো খেলি। দিনশেষে যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে।’