সাউথ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশের বোলারদের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছিল। অচেনা কন্ডিশনের দোহাই দিয়ে পার পাওয়া গেছে সেবার। কিন্তু ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একই অবস্থা দেখে বোলিংয়ে ঘাটতিটা স্পষ্ট হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে যাবে টাইগাররা। তার আগে বোলিং নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা শোনালেন জাতীয় দলের সাবেক সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও।
মাশরাফী না থাকায় সফরে স্ট্রাইক বোলারের শূন্যতা অনুভব করবে বাংলাদেশ দল, সেটি স্পষ্ট করেই বললেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের প্রধান কোচ সালাউদ্দিন।
‘মাশরাফী খেলতে পারলে খুব ভাল হত। পুরো ঘরোয়া ক্রিকেট দেখার পর মনে হয়েছে মাশরাফীই আমাদের মূল পেস বোলার। মোস্তাফিজ খুব ভাল করছে, মাশরাফী থাকলে একটা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বোলার থাকত দলে, যে নতুন বলে কার্যকরী। মোস্তাফিজ নতুন বলে কম বল করে। আমাদের আসলে নতুন বলে স্ট্রাইক বোলার নেই।’
মাশরাফী থাকলে ভাল হত। সঙ্গে সালাউদ্দিন বলছেন দলে থাকা বাকিদের সঠিকমত ব্যবহার করতে পারার বিষয়টিও, ‘বাকিদের কীভাবে ব্যবহার করা হবে, কোথায় ব্যবহার করা হবে, সেটার উপর আসলে নির্ভর করে দলের শক্তি কেমন হবে। খুব বেশি বোলার আমাদের নেই, যারা আসলে টি-টুয়েন্টিতে ভাল বল করতে পারে।’
বোলিং নিয়ে সালাউদ্দিনের চিন্তার কারণ অমূলকও নয়। সবশেষ চারটি টি-টুয়েন্টিতে গড় মূল্যায়ন করলে ইনিংস প্রতি ২০০এর উপর রান দিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। বিপরীতে, প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষের মাত্র ৪টি করে উইকেট তুলতে পেরেছেন তারা।
গত বছর সাউথ আফ্রিকা সফরে প্রথম টি-টুয়েন্টিতে স্বাগতিক দল তোলে ১৯৫ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে ২২৪। এবছর বাংলাদেশ সফরে এসে স্বাগতিক দলের দেয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্য ১৬.৪ ওভারে টপকে যায় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ম্যাচে লঙ্কানরা তোলে ২১০। এই পরিসংখ্যানই বলছে টি-টুয়েন্টিতে বোলিংয়ে কতটা ধারহীন বাংলাদেশ। যা চোখে পড়ার মতই।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে নতুন ৬ ক্রিকেটারের অভিষেক করিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। শ্রীলঙ্কায় নিধাস ট্রফির দলে সেই নতুনদের মধ্যে টিকতে পেরেছেন মাত্র দুজন। গেল সিরিজ আর আসন্ন সিরিজে পরিবর্তিত খেলোয়াড়ের সংখ্যা পাঁচ। হুট করে কাউকে দলে নিয়ে আসা আবার হুট করেই ছুঁড়ে ফেলা যে ভবিষ্যতের জন্য ভাল নয় সেটিও মনে করিয়ে দিলেন সালাউদ্দিন।
‘একটা ছেলেকে বড় করার জন্য সবারই সহযোগিতা করা উচিত। তাদেরকে আমরা কিভাবে একটা বড় পর্যায়ে নিয়ে যাবো সেটা ভাবতে হবে। যখন কোন ছেলেকে একটা ম্যাচ খেলার পর ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হবে, সে ওই জায়গা থেকে ক্যারিয়ারে গ্রো-আপ করতে পারবে না। অনেকে হয়ত পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসবে। কিন্তু অনেকের ক্যারিয়ারে আবার বড়সড় নেতিবাচক প্রভাবও পড়তে পারে।’
‘একটা সিস্টেম থাকা উচিত। কোন ছেলেকে সুযোগ দেবে, কোন ছেলেকে আস্তেধীরে গ্রো-আপ করাবে, তাতে একটা ভাল পর্যায়ে যাবে, এসব নিয়ে ভাবতে হবে। এরপর পর্যাপ্ত সুযোগ দিয়ে বড় পর্যায়ে নিলে তাদেরকে বাদ দিতে হবে না। কারণ তাড়াতাড়ি দলে ঢোকাও যেমন ভাল না, তাড়াতাড়ি টিম থেকে বের করে দেয়াও ক্ষতিকর হতে পারে।’ যোগ করেন সালাউদ্দিন।