দশম জাতীয় নির্বাচনের পর এবারও শঙ্কা ছিল বড় রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নাও নিতে পারে। কিন্তু তা আর এখন নেই। দলগুলো এখন নির্বাচনমুখী। এতো-এতো দল ও রাজনৈতিক জোটের নির্বাচনী প্রস্তুতিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশে দেশটির ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বিল মোলারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর তার বরাতে এমনই জানিয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেছেন: বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের নেত্রী সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যা যা প্রত্যাশা রাখেন যুক্তরাষ্ট্রও সেভাবেই ভাবে।
বুধবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন মুলার। এরপর সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন ইমাম।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন: তারা বলছেন, এখন বাংলাদেশে শান্তির ভাল পরিবেশ বিরাজ করছে। ওরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এমন কোন দল নাই যারা অংশ গ্রহণ করছে না। ওরা তো বরঞ্চ খুব এতোগুল দল এরকমভাবে কিভাবে তোমরা এতো জোট ম্যানেজ করছো কিভাবে?
‘‘ওরা ভাবতেই পারে না, আমরা এগুলো করতে পারি।আমরা বলছি, এগুলো আমরা করছি। আমাদের সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে।’’
বৈঠকের এজেন্ডা তুলে ধরে এইচ টি ইমাম বলেন, আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সব থেকে আনন্দের কথা এই যে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যে সমস্ত কথা বলেন, আমরা চাই একটি অংশীদারত্বমূলক সকলে অংশগ্রহণ করুক। একটি সুস্থ ও অবাধ এবং অত্যন্ত স্পষ্ট একটি নির্বাচন, যেটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই আদর্শগুলো আমেরিকানরাও ধারণ করে। তাদের সঙ্গে আমাদের মতের যথেষ্ট মিল আছে। এই জন্যই তারা আমাদের এখানে এসেছেন।
‘‘তারা বলছেন, আমরা অত্যন্ত খুশী। তোমরা সংলাপ করেছো। এই ডায়ালগে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সকলকে যেভাবে নিয়ে এসেছে। ওদের যা কিছু বলার ছিল তারা কিন্তু প্রকাশ্যেই বলে ফেলেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ক্ষোভের জায়গাগুলো তারা বলেছেন এবং সরকার হাসিমুখে নিয়েছেন। আমরা যা যা করার দরকার ছিল, যে প্রতিশ্রুতি জননেত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন সে প্রতিশ্রুতিগুলো আমরা সব পালন করছি। আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার সম্পন্ন চেষ্টা করছি সর্বাত্মকভাবে।’’
কিন্তু সবকিছুর উপরে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে সমস্ত আলোচনা-সমালোচনার ঊর্ধ্বে রেখে করতে হবে। তাহলেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে- বলেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাহলে আমেরিকা কেন পাঠাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমেরিকা অবজারভার পাঠাবে। ওরা সব জায়গাতেই পাঠায়। ওরা বলছে, আমরা নির্বাচন কেমন হয় দেখবো? সত্যিকার সুষ্ঠু হয় কি না? ওদের তো কতগুলো থিঙ্ক ট্যাংক আছে। আমেরিকান আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক নয়।
ইমাম বলেন, বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়। এরকম নির্বাচন কিন্তু অনেক দেশেই হয় না। এটা আমাদের গর্ব করার জিনিস। এই জন্যই ওরা আসে।‘
‘তারা সকলেই বলছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটা অন্য স্ট্যান্ডার্ড আছে। সেই স্ট্যান্ডার্ডের জন্য, এই উচ্চতার মানের জন্যই তারা এখানে আসেন। তারা আরও সম্পর্ক গভীরতর করতে চান। আমাদের সরকার আরও ভালভাবে শক্তিশালী হোক। এখানে তারা আরও বিনিয়োগ করবেন এমন অনেক কিছু ব্যাপার আছে।’’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন: ড. মসিউর রহমান, উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।