বর্ষিয়ান কূটনীতিক সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্নালিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি সর্বশেষ ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী একজন বাংলাদেশী পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং কর্মজীবনে একজন কূটনীতিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখেন তিনি।
মোয়াজ্জেম আলী ১৮ জুলাই ১৯৪৪ সালে পূর্ব ব্রিটিশ রাজ্যের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস পাস করেন । তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন এবং লাহোরের সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন। এছাড়া ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল অফ অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে পড়াশোনা করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন, সেসময় তিনি পাকিস্তান সরকারকে ত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষ নিয়েছিলেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী দূতাবাস খুঁজে পেতে সহায়তা করার পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থান জোরদার করতে সহায়তা করেছিলেন। স্বাধীনতার পরে ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৮২-১৯৮৬ সালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন এবং ১৯৮৬-১৯৮৮ সালে ভারতে বাংলাদেশি হাইকমিশনার হিসাবে কাজ করেছেন।
মোয়াজ্জেম আলি বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে ইউনেস্কোর কাছে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস খসড়া প্রতিবেদন দিয়ে ভাষা আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে প্রবর্তনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করেছিলেন। তারপরে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন, সেসময় তিনি ইউরোপে স্বল্পোন্নত দেশের রপ্তানির জন্য শুল্কমুক্ত করার জন্য কাজ করেছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার নিযুক্ত হন এবং গত ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ মাস কমিউনিকেশন (আইআইএমসি) এলামনাই এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ।