বসন্তকে বিদায় জানিয়ে আসছে নতুন বছর। বাংলা নববর্ষ বাঙালির জীবনে একটি আনন্দময় উৎসব হিসেবে প্রাচীনকাল থেকে উদযাপিত হয়ে আসছে। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ পহেলা বৈশাখ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকেন। নতুন বছর বরণ করে নিতে ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে’ স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এবারের আয়োজনে থাকছে ব্যতিক্রমী যাত্রাপালা।
চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা গত দুই সপ্তাহ অক্লান্ত পরিশ্রম আর ব্যস্ত সময় পার করে সম্পন্ন করেছেন আয়োজন। প্রতিবারের মতো এবারও কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি বাঁশের চটা আর কাঠ দিয়ে শত ফিট লম্বা বিশাল আকৃতির ময়ূরপঙ্খী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ। সঙ্গে অনুষাঙ্গিক সহায়ক হয়ে থাকবে কাল্পনিক ঘোড়া, মোরগ, পেঁচাসহ গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছু। হুতুম পেঁচা, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহসহ বিভিন্ন আকৃতির তিন শতাধিক মুখোশ, প্ল্যাকার্ড, বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন প্রতিকৃতি দিয়ে বাঙালি সাজ-সজ্জার বেশ অনেকগুলো উপকরণ বহন করে ওইদিন সকাল ৯টায় বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা।
চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুম হাওলাদার জানান, আমরা প্রতি বছর চেষ্টা করি সব চেয়ে ভালো আয়োজন করার। থাকবে ঐতিহ্যবাহী পান্তা ইলিশ, বসবে গ্রামীন মেলা, বিভিন্ন বাংলা ঐতিহ্যের সরঞ্জামাদি নিয়ে বিভিন্ন স্টল। এবারের আয়োজনে ব্যতিক্রমী যাত্রাপালা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষিকাদের অভিনয়ে নির্মিত এ যাত্রাপালাটিতে বাঙালি সাংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানিয়া তন্বী জানান, আমরা এবারই প্রথম বাংলা বর্ষকে বরণ করতে যাত্রাপালায় অভিনয় করছি। বাঙালির ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছে। উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা অশুভকে দূর করা, সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতীক। এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাঙালির ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, জাতিগত সব ধরনের বৈশিষ্ট্য এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে হস্তান্তর হচ্ছে।