সংসদে সংবিধানের সংশোধনী পাশের জন্য রোববার ৪১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আসতে দেরি হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এ কারণে প্রায় ঘণ্টা পর শুরু হওয়া অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে শুধু তারই বক্তৃতার জন্য সময় রাখা।
রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ‘হল অব ফেমে’ প্রবেশ করেই দ্রুত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শুরুতেই তিনি ববিতা ও ফারুকের হাতে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন। এরপর একে একে পুরস্কারপ্রাপ্ত শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
পরে ফটো সেশনের সময় প্রধানমন্ত্রী ববিতার সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলার সময় জানতে পারেন, আজীবন সম্মাননার এ দিনেও ববিতার মন একটু খারাপ। এর কারণ জানতে চান তিনি।
ববিতা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তিনি একটা বক্তৃতা লিখে এনেছিলেন। কিন্তু অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত হওয়ায় বক্তৃতাটি করতে পারলেন না।
এ কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে ববিতা এবং আজীবন সম্মাননা পাওয়া ফারুকের বক্তৃতার ব্যবস্থা করতে বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশে বিস্মিত, উচ্ছ্বসিত ববিতা তার লিখিত বক্তব্য নিয়ে গেলেন ডায়াসে। শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অসাধারণ একটি বক্তব্য দেন তিনি।
বক্তব্য দিতে গিয়ে ববিতা স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। যিনি স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে তার (ববিতার) মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, তুই একদিন অনেক বড় অভিনেত্রী হবি।
বক্তব্যের এক ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দুটি অনুরোধ রেখে ববিতা বলেন, জীবনের পড়ন্ত বেলায় অনেক শিল্পীকে দুঃখে কষ্টে জীবন কাটাতে হয়। জীবন সায়াহ্নে যেন অন্তত নিজের ঘরে থাকা ও সুচিকিৎসার অধিকারটুকু শিল্পী ও কলাকুশলীরা পান সে ব্যবস্থা যেন প্রধানমন্ত্রী করে দেন।
অারেকটি আর্জিতে তিনি প্রয়াত অভিনেতা রাজ্জাকের স্মৃতি অমর করে রাখতে তার নামে ফিল্ম ইনস্টিটিউট কিংবা বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভকে রাজ্জাকের নামে নামকরণ করার অনুরোধ রাখেন।
ববিতার এই বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ‘হল অব ফেম’ পুরোটা মানুষের করতালিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে।
এই অনুষ্ঠানেই ২০১৬ সালের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ‘অজ্ঞাতনামা’র প্রযোজক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর।
‘অজ্ঞাতনামা’র জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার হিসেবে পুরস্কার নেন এই সময়ের জনপ্রিয় নির্মাতা তৌকীর আহমেদ।
এছাড়াও সেরা অভিনেতার পুরস্কার নেন চঞ্চল চৌধুরী (আয়নাবাজি)। আর সেরা অভিনেত্রীর (দ্বৈত) পুরস্কার গ্রহণ করেন নুসরাত ইমরোজ তিশা (অস্তিত্ব) ও কুসুম শিকদার (শঙ্খচিল)।