সারাদেশে নদ-নদীর পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হলেও কিছু কিছু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৭৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
এর মধ্যে ৬৭ জন পানিতে ডুবে ও ৮ জন নৌকা ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। আগামী দু’সপ্তাহে বড় ধরণের বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।
বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে চলছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। সেই সাথে বন্যা দুর্গতরা আক্রান্ত হচ্ছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে।
বন্যাকবলিত সবগুলো জেলায় খাদ্য সংকটের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া চর্মরোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ। বন্যার পানিতে সড়ক, ব্রিজ ও কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।
সরকারি ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে এখনও বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চর ও দ্বীপ চরগুলোর অনেক বাড়ি-ঘর থেকে এখনও পানি নামেনি।
গাইবান্ধার সবকটি নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি এখনও বিপদসীমার উপরে। বন্যার পানির চাপে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা-ডাকুমারা সড়কের ৫০মিটার ধসে যাওয়ায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ১০টি গ্রাম। জেলার অধিকাংশ এলাকা দীর্ঘদিন যাবত বন্যা কবলিত হয়ে থাকায় শ্রমজীবী মানুষরা অর্থ সংকটে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৯ হাজার ৮৭০টি ঘরবাড়ি।
যমুনার পানি কিছুটা কমলেও জামালপুরে বন্যার পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে। যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে এখনো পানি বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ১ হাজার ২৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ৬০টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৪২ হাজার ৭৩০ জন বানভাসী মানুষ। এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মারা গেছে শিশুসহ ২৮ জন মানুষ।