চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বন্ধ হোক অনুমোদনহীন সব হাসপাতাল, ক্লিনিক

লাইসেন্স বা অনুমোদন না থাকায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার ১৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার একটি রিট আবেদনের শুনানির পর বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন

মূলত গত এপ্রিলে একটি দৈনিকে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। তার আগ পর্যন্ত এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক যে অবৈধ, তা গোপন রাখা হয়েছিল। আর এই বিষয়টি শুধু যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর কর্তৃপক্ষ গোপন রেখেছে তা নয়। এসব প্রতিষ্ঠানকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা সরকারের একাধিক সংস্থাও এতে সহায়তা করেছে। আর এ কাজ যে তারা এমনি এমনি করেছে, তাও ঠিক না।

যে ১৪টি হাসপাতাল এবং ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছেন, সেগুলোর অবস্থান মাত্র ৫’শ মিটারের মধ্যে বলে ওই পত্রিকাটি উল্লেখ করেছিল। তার মানে প্রতি ১’শ মিটারের মধ্যে প্রায় ৩টি হাসপাতাল বা ক্লিনিক। অার শুধু রাজধানীর একটি থানা এলাকাতেই ওই হাসপাতালে অবস্থিত।

 

আমরা নিশ্চিত করেই বলতে পারি- এমন চিত্র শুধু মোহাম্মদপু্রে নয়; সারাদেশেরই। যতক্ষণ না এ ধরনের অনুমোদনহীন হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় কোনো রোগী মারা না যান, ততক্ষণ কেউ তার দিকে দৃষ্টিপাত করে না। আর বড় ধরনের ক্ষতির পরই শুধু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটু নড়েচড়ে বসে। কিছুদিন পর আবার যা-তা অবস্থায় চলতে থাকে।

অনেকেরই প্রশ্ন: দেশের আনাচে-কানাচে এমন হাজার হাজার অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিক চলছে কিভাবে? এর উত্তরও বেশ সহজ। কারণ এর পেছনে রয়েছে চিকিৎসকদেরই একটি বড় চক্র। যারা সরকারের ভেতরে-বাইরে, তারা আবার বেশ প্রভাবশালী। আর যারা এই প্রভাব বিস্তার করতে পারে না; তারা অর্থের প্রভাব খাটিয়ে অনুমোদন ছাড়াই বছরের পর বছর ব্যবসার নামে রোগীদের গলা কাটে।

পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে মানুষ সবকিছুর বিনিময়ে তাকে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। এ জন্য তার কাছে একমাত্র ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেন চিকিৎসকরাই। বলতে গেলে অসহায় মানুষের আশ্রয় তারা। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়; সেই ভরসা দেয়া মানুষগুলোই প্রত্যাশিত সেবা দেয়ার পরিবর্তে অর্থ হাতিয়ে নিতে তৎপর হয়। এসব অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগী পাঠিয়ে তারা মোটা অঙ্কের কমিশন নেন।

আমরা মনে করি, শুধু মোহাম্মদপুরেই নয়; সারাদেশে যেসব অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিক আছে-তাদের বিরুদ্ধেও এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।