চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বনানী ধর্ষণ: ফরেনসিক রিপোর্টের গুরুত্ব না থাকায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়ার আশা

বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ফরেনসিক রিপোর্টে ধর্ষণের কোন আলামত না পাওয়ার বিষয়টি যখন ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে শঙ্কার জন্ম দিয়েছিল, তখন এ বিষয়ে আশার বাণী শুনিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দু’জন আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের জেষ্ঠ্য আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমান এবং আইনজীবী স্বর্ণকান্তি দাস চৌধুরি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেছেন, ফরেনসিক রিপোর্টে ধর্ষণের কোন আলামত না পাওয়ার বিষয়টি মামলায় কোন ধরনের প্রভাব ফেলবে না। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, যেহেতু আসামীরা ধর্ষণে নিজেদের সম্পৃক্ততার বিষয় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে, তাই ফরেনসিক রিপোর্টের ওপর নির্ভর না করে মামলা তার নির্দিষ্ট গতিতেই চলবে। আমরা তাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। কেননা ঘটনার পর প্রাণনাশসহ বিভিন্ন হুমকি উপেক্ষা করে একমাসের বেশি দিন পর ওই দুই তরুণী বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে যান। তবে থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে তাদেরকে হয়রানি করে বলে অভিযোগ ওঠার ৪৮ ঘণ্টা পর ৬ মে ওই অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে। এই অবস্থায় ঘটনার একমাস পর ফরেনসিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত না পাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। এছাড়া এই ঘটনায় ধর্ষণের সময় ধারণ করা ভিডিও পুলিশ উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে। এরপরও অপরাধ প্রমাণের বিষয়ে আর কোন পথ বাকী থাকতে পারে না। তাই পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে মাননীয় আদালত এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। বনানীর ঘটনায় অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় শুরু থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু সব আশঙ্কাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতের কাছে সমর্পণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে এজন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। তবে ধর্ষণের শিকার হওয়াদের দেয়া গোপন জবানবন্দি ইউটিউব ও ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসার খবর আমরা পেয়েছি। পুলিশ অবশ্য এই ভিডিও ছেড়ে দেয়া ব্যক্তিদের খুঁজছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু গোপন জবানবন্দি প্রকাশ হওয়াটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে সর্ষের মধ্যে ভূত রয়েছে বলে আমরা মনে করি। তাদের বিরুদ্ধে আদালত এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে খবর পাওয়া যায়নি। এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি ফরেনসিক রিপোর্টের দোহাই দিয়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া তরুণীদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ রুদ্ধ না করে পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য আমরা আদালতের কাছে উদাত্ত আহ্বান করছি।