২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর উৎক্ষেপণ করা হবে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-ওয়ান। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণকারী দেশ হিসেবে নাম লেখাবে বাংলাদেশ। এতে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার আশাও করছে বাংলাদেশ।
২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শক সংস্থার সঙ্গে চুক্তির পর সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে, এ বছরের ১৫ জানুয়ারি রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কেনা হয়েছে কক্ষপথ। আজ বুধবার স্যাটেলাইট কেনার জন্য চুক্তি হলো ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান থ্যালেস এলেনিয়া স্পেসের সঙ্গে।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হলেও সেই টাকা ৬ থেকে ৭ বছরের মধ্যে উঠে আসবে বলে আশা করছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, বিটিআরসি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবার পাশাপাশি ই-লার্নিং , ই-মেডিসিন, ই-এডুকেশন সেবা প্রদান করতে পারবো। এছাড়া প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় টেরিস্টেরিয়াল অবকাঠামো যদি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমরা সারা দেশে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আওতাভুক্ত অন্যান্য দেশে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবার বিস্তার ঘটিয়ে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সম্প্রচারের ভাড়াবাবক বাংলাশে এখন প্রায় ১’শ কোটি টাকা খরচ করছে বলে উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমাদের এই টাকাটি সম্পূর্ণ সাশ্রয় হবে। আমরা ২৫০ থেকে ৩ ’শ কোটি টাকা আয় করতে পারবো।
বিটিআরসি থেকে জানানো হয়েছে, কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ন্ত্রণে গাজীপুরের জয়দেবপুর এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি স্টেশন স্থাপন করা হবে।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান ডক্টর শাহজাহান মাহমুদ বলেন,১৫ বছরের জন্য উৎক্ষেপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। একটু হিসেব করলেই দেখা যাবে, বিদেশী স্যাটেলাইটের ভাড়াবাবদ প্রতিবছর আমরা যে পরিমাণ অর্থ খরচ করি সেই হিসেবে নিজেদের স্যাটেলাইট থাকাই যুক্তিযুক্ত। সরকার খুব শীঘ্রই স্যাটেলাইট পরিচালনার জন্য একটি পৃথক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করবে।
স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি বছর মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়ায়। যার পরিমাণ প্রায় ১শ’ ১০ কোটি। সে অর্থ সাশ্রয় করার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-ওয়ান’ স্থাপন করছে বাংলাদেশ ।