রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. রওনক জাহান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুঁথিগত বিদ্যায় রাজনীতি চর্চা করেন নি, তার রাজনীতি চর্চার মূলভিত্তি ছিল দেশের মাটি ও সাধারণ মানুষ।
তিনি বলেন, যুগে যুগে বিশ্বে অনেক খ্যাতিমান রাজনীতিকের জন্ম হয়েছে সত্যি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো ইতিহাস সৃষ্টিকারী রাজনীতিবিদ খুবই বিরল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রওনক জাহান।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত একক স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সিপিডি’র সম্মাননীয় ফেলো প্রফেসর ড. রওনক জাহান ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: স্বপ্ন, আদর্শ এবং সংবিধানের মূলনীতি’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
জুম অ্যাপসের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ড. রওনক জাহান বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তার প্রবন্ধে বলেন, বাঙালির জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষামুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে দুঃখী মানুষের মধ্যে হাসি ফুটিয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা- এই দুটি ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের স্বপ্ন।
তার প্রথম স্বপ্ন বাঙালির স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। কিন্তু তার দ্বিতীয় স্বপ্ন অর্থাৎ শোষণহীন গণতান্ত্রিক সমাজ রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার স্বপ্ন পূরণে বাঙালি জাতিকে অনেক দিন ধরে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
অধ্যাপক রওনক জাহান তার প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক আদর্শ, সকল ধর্মের মানুষের পারস্পারিক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং কোন অবস্থায়ই ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার যে আদর্শ ছিল তা বিশদভাবে তুলে ধরেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশের মাটি ও মানুষ এবং জনগণের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্খা, বেদনা ও স্বপ্নের সঙ্গে এমনই নিবিড়ভাবে মিশে গিয়েছিলেন সে কারণে তার পক্ষে সঠিক সময়ে সঠিক রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের জন্য জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ সৃষ্টি তার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির জাতির পিতা ও স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্রষ্ঠাই নন, তিনি হলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালিও।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান স্মারক বক্তাসহ সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ছাড়াও বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা যুক্ত ছিলেন।