কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙা এবং সাম্প্রতিক সময়ে মৌলবাদীদের উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে ভার্চুয়াল আলোচনার মাধ্যমে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কানাডা প্রবাসী বাঙালিরা।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, সাম্প্রদায়িক, উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী কর্তৃক কুষ্টিয়ায় রাতের অন্ধকারে জাতির পিতার নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙা বিজয়ের এই মাসে অত্যন্ত দুঃখজনক, দেশের গণতন্ত্রের উপরে চরম আঘাত যা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এই হায়েনাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রবাসে থেকেও সোচ্চার, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
টরোন্টোর ‘নতুন দেশ’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর বলেন, ধর্মীয় পরিচয় ব্যবহারকারী কয়েকটি সংগঠনের নেতারা ভাস্কর্য বিরোধীতার নামে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে লড়াইয়ে নেমেছে। এই দু:সাহসকে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ভাস্কর্য যেমন হঠাৎ করে আবিষ্কৃত হয়নি, ইসলাম ধর্মও সেখানে নতুন যায়নি। সারা বাংলাদেশের যখন অর্থপাচার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠা শুরু হয়েছে সেই সময় এই গ্রুপটি কৌশলে ভাস্কর্য বিতর্ক সামনে এনে অর্থপাচারের আলোচনাটাকে ধামাচাপা দিয়ে ফেলার পরিবেশ তৈরি করেছে। অর্থপাচারকারী দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতে ইসলামকে ব্যবহার করে তারা ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনে নেমেছে কী না সেটি ভেবে দেখা দরকার।
প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম রিপন বলেন, মৌলবাদের বিষ দাঁত ভেঙে দিতে এখনই সবার ঐক্যবদ্ধভাবে ভাস্কর্য ভাঙার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মোঃ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘মামুনুল হক আর বাবুনগরী কিসের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে তা অনুধাবন করতে দেরী হলে দেশকে তার সীমাহীন মূল্য দিতে হবে। ভাস্কর্য আর মূর্তি এক নয়, এমন নরম কথা বলে প্রকারান্তরে নীতি নির্ধারকদের কেউ কেউ যে অভিমত রাখছেন তাতে সাম্প্রদায়িকতাকেই সমর্থন করা হচ্ছে।’
‘‘কুষ্টিয়ায় জাতির জনকের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়েছে, কাল হয়তো অপরাজেয় বাংলা ভেঙে ফেলা হবে। ভবিষ্যতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ আর প্রাণের শহীদ মিনার উপড়ে ফেলার ঘোষণা আসার আগেই কঠোর হস্তে এই দানবীয় শক্তিকে মোকাবেলা করতে হবে, অন্যথায় বিপন্ন হবে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব।’’