ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস দাবি করেছেন, প্যারিসে ইসলামী স্টেটের জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করা হয় সিরিয়ায়। তার বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ফরাসি কর্তৃপক্ষের অনুসন্ধানে বের হয়েছে নতুন করে ফ্রান্সে ও ইউরোপের অন্যান্য দেশেও সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ফরাসী প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ফ্রান্স কোনো একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়ছে না, বরং একটি ‘সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর’ সঙ্গে লড়ছে।
শুক্রবার রাতে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় ১২৯ জন নিহতের মধ্যে ১০৩ জনের নাম ঠিকানা জানতে পেরেছে ফরাসী কর্তৃপক্ষ। নিহতের তালিকায় ২০ জন ছিল ভিনদেশী।
আজ ফ্রান্সের স্থানীয় সময় ১১টায় নিহতের স্মরণে গোটা জাতি এক মিনিট নীরবতা পালন করে। যুক্তরাষ্ট্রও ফ্রান্সে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে।
এদিকে ফরাসী আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের খোঁজে আজ সারা দিনে ফ্রান্সের সন্দেহভাজন ১৫০টি জায়গায় অভিযান চালায় এবং সন্দেহভাজন ২৩ জনকে আটক করে ফরাসী পুলিশ।
ফরাসী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে প্যারিস আক্রমণের সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারী বেলজিয়ামের আব্দেল হামিদ আবাউড। তিনি মরোক্কোর আবু ওমার আল বালজিকি নামে বিভিন্ন জঙ্গি হামলা চালিয়েছে।
ফ্রান্সের গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে প্যারিস হামলায় জড়িত তিন ভাই। এর মধ্যে একজন ব্যাপকভাবে জড়িত, তিনজনের মধ্যে একজন আত্মঘাতী হামলায় মারা যান। একজন বর্তমানে পাশ্ববর্তী দেশ বেলজিয়ামে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তবে অপরজনের বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
ওই তিনভাই হলেন; সালাহ আবদেস স্লাম, ইব্রাহিম আবদেস স্লাম ও ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই। এর মধ্যে ২৯ বছর বয়সী ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই আত্মঘাতী হামলা চালান।
এদিকে ফ্রান্সে ভয়াবহ হামলার দুদিন পরেই সিরিয়ার রাকা শহরে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের একটি শক্ত ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ফরাসী যুদ্ধবিমান।
ফরাসী প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, বারোটি যুদ্ধবিমানে করে কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এরমধ্যে আইএসের একটি কম্যান্ড সেন্টার ও একটি প্রশিক্ষণ শিবিরেও হামলা করা হয়েছে।
এর আগে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদের প্যারিসে হামলার জন্য আইএসকে দায়ী করে, জবাব দেবার অঙ্গীকার জানিয়েছিলেন।
শুক্রবার রাতে প্যারিসের ৬টি স্থানে চালানো হামলায় নিহত হয় ১২৯ জন। আহত হয়েছে প্রায় শতাধিক, এখনও জরুরি অবস্থা চলছে শান্তির ওই নগরিতে। মোতায়েন করা হয়েছে দেড় হাজার সেনা। ৩ দিনের শোক পালন করছেন ফরাসিরা।