গ্রিজমান, পল পগবা, এমবাপে, লরিসদের দল বিশ্বকাপে ভালো কিছু যে করবে এই ব্যাপারে অনেকেই আশাবাদী ছিলেন। কারণ যে দলে তারকার ছড়াছড়ি। সেই দলের তো অনেক দূর যাওয়ারই কথা। ফুটবলপ্রেমীদের সেই আন্দাজ বৃথা যায়নি। রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। এতে চমকের কিছু নেই। তবে এত তারকার মাঝে বেঞ্জামিন পাভার্ড মতো ‘অখ্যাত’ এক ফুটবলারের প্রচারের আলোয় চলে আসাটা অবশ্যই চমকের ব্যাপার।
ফ্রান্স দলের বিস্ময় হিসেবে নিজেকে এবারের বিশ্বকাপে চিনিয়েছেন পাভার্ড। ২২ বছরের এই ফরাসি ফুটবলার রাশিয়ায় নিজের প্রতিভা চিনিয়েছেন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ভবিষ্যতের তারকা বড় হিসেবে। পাভার্ডে মতো অবস্থা লুকাস হার্নান্দেজেরও।
তবে জিব্রিল সিদিবে ও বেঞ্জামিন মেন্ডির জায়গায় দুই তারকা সুযোগ পেয়ে তার বিন্দুমাত্র নষ্ট করেননি।
অথচ এই পাভার্ডের নাকি দলের সঙ্গে বিশ্বকাপে আসারই কথা ছিল না। ফ্রান্স দলে জায়গা পাওয়াটাই নাকি তার কাছে ছিল বড় বিস্ময়! আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে একটা সময় ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল ফ্রান্স। ঠিক সেই সময়ই দর্শনীয় গোল করে দলকে সমতায় ফেরান এই ফুলব্যাক। বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে করা সেই গোল এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা হিসাবে রেকর্ডে থাকবে।
বিশ্বকাপের আগে মাত্র ৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন পাভার্ড। এত কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কাউকে দলে নিতে চাননি কোচ দিদিয়ের দেশম। পাভার্ড বলেন, ‘এক বছর আগেও কেউ আমাকে চিনত না। তবে আমি নিজেকে প্রমাণ করার সময় পেয়েছি। স্বপ্ন দেখেছি। ২০০৬ সালে ফ্রান্সের খেলা টিভিতে দেখতাম জিনেদিন জিদানের জার্সি পড়ে। আজও সেই জার্সি আমার কাছে আছে।’
বিশ্বকাপে হঠাৎ পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে ভুল করেননি পাভার্ড। ৫ ম্যাচে ৪৮.১ কিলোমিটার দৌড়েছেন তিনি। ২৪৩ পাস দিয়ে সফল হয়েছেন ২১০টিতে। বিপক্ষ ফুটবলারদের পা থেকে বল কেড়ে নিয়েছেন ২৩ বার। আর আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে অনেক দিন মনে রাখার মতো এক চমত্কার গোল তো আছেই!
সমবয়সী হার্নান্দেজেও বিশ্বকাপের আগে খুব একটা পরিচিত ছিলেন না। এমনকি লা লিগায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে নিয়মিত জায়গা পাননি। ব্রাজিলের ফিলিপে লুইসের ইনজুরিরর পর প্রথম একাদশে সুযোগ পান।
হার্নান্দেজ বলেছেন, ‘শুরুতে আমি মনে করেছিলাম, আমাকে বেঞ্চেই বসে থাকতে হবে। কিন্তু শেষে আমি ভাগ্যবান বলেই খেলছি। আমি সেই ধাঁধাটা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তবে খেলার জন্যে কঠিন পরিশ্রম করেছি। সেই দলের লোক নই, যারা কথা বেশি বলে, আমি মুখ বন্ধ করে কাজ করি।’