বাংলাদেশ নারী দলের তিন ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ, জাহানারা আলম ও ফাহিমা খাতুনের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণা করছে একটি মহল। শুরুতে তারা ছেলে ক্রিকেটার ও ক্রীড়া সাংবাদিকদের বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ পাঠান। তাদের বন্ধু তালিকায় ক্রিকেটসংশ্লিষ্ট মানুষ বেশি থাকায় আসল আইডি ধরে নিয়ে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকে। আর সেসব আইডি থেকে নানা প্রতারণা চলতে থাকায় দুর্নাম হচ্ছে নারী ক্রিকেটার ও দেশের ক্রিকেটের।
চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে কিছুটা সখ্যতা গড়ে তোলার পর সেসব আইডি থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। ক্রিকেটাররা বিষয়টি নিয়ে মহাবিরক্ত। টিম টাইগ্রেসের ওয়ানডে অধিনায়ক রুমানা আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে তুলে ধরলেন অসহায়ত্বের বিষয়টি।
‘খুবই ঝামেলায় আছি। অনেকদিন হল ভুয়া আইডি খুলে উল্টা-পাল্টা কাজ হচ্ছে। এমনও হয়েছে আমাদের কোচ সারওয়ার ইমরান স্যারের সঙ্গেও চ্যাটিং করেছে ভুয়া আইডি(রুমানা আহমেদ নামে) থেকে। কোচকে স্যার না বলে ভাই বলে সম্বোধন করার পর সন্দেহ হলে স্যার আমাকে কল করেন। তখন বলেছি, ওটা ফেক আইডি। এমন অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। ফেসবুকে তারা নিজেদের আসল বলে দাবি করছে। এটার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেব বুঝতে পারছি না।’
রুমানার সতীর্থ ফাহিমা খাতুন অভিযোগ জানিয়ে বললেন, ‘ব্যাপারটা নিয়ে সামাজিকভাবে খুব হেয় হতে হচ্ছে। আমার আত্মীয়, বন্ধুদের সবাইকে রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে। এমনকি আমাকেও পাঠিয়েছে। আমাকে শোনাচ্ছে, সে-ই আসল ফাহিমা। এমন সমস্যায় জাহানারা আপুও পড়েছে।’
ক্রিকেটারদের অভিযোগের পর বিষয়টি নিয়ে বিসিবির মিডিয়া বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার রাবিদ ইমামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জানালেন, ‘মেয়েরা যদি চায় আমরা তাদের আইডি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভেরিফাই করে দিতে পারব। তাহলে এ ধরণের সমস্যা থেকে তারা মুক্তি পেতে পারে। ফেক আইডি একটা একটা করে সনাক্ত করে বন্ধ করার চেয়ে এটাই হবে স্থায়ী সমাধান।’
ক্রিকেটার ছাড়াও অন্য অঙ্গনের তারকা, জনপ্রতিনিধি, এমনকি প্রশাসনের মানুষও এমন সমস্যায় পড়ছেন বলে জানালেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আ ফ ম আল কিবরিয়া।
সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং অ্যান্ড ওয়েবসাইট ক্রাইম সেকশনের দায়িত্বে থাকা কিবরিয়া চ্যানেল আই অনলাইনকে বললেন, ‘এ ধরণের অভিযোগ প্রচুর আসে। প্রতিদিনের ঘটনা। সরকারি অফিসার, ডিসি, চেয়ারম্যান, এমপিদের নামে ফেক আইডি খুলেও অনেকে প্রতারণা করছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা কাজ করতে পারি।’
নারী ক্রিকেটারদের করণীয় সম্পর্কে আল কিবরিয়া বললেন, ‘বিসিবি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে ভেরিফাই করে দিতে পারলে ভালো। ফেসবুকের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করে ডিটেইলস তথ্য দিতে হবে। অথেনটিক ডাটা চাবে। পাসপোর্ট, এনআইডি চাবে, তখন করে দেবে। তাদের অনেকবেশি ফলোয়ার যদি হয় তাহলেও হবে।’
‘বিসিবি আমাদের কাছে অভিযোগ জানাতে পারে। তাহলে আমরা কাজ করতে পারব। বিসিবি থেকে যেকেউ অভিযোগ পত্রগুলো নিয়ে আসলে আমরা পদক্ষেপ নেব। দেশের মেয়ে ক্রিকেটাররাও প্রতারণার শিকার হচ্ছে আমাদের জানা ছিল না। আবার আমরা এটা নিয়ে কাজ করি এটাও হয়ত অনেকে জানেন না।’ -বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত এ উপ-পুলিশ কমিশনার।